দুই শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু, সন্দেহের তীর এই অণুজীবের দিকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রে পরপর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই দুই শিশুর মৃত্যু এখন আলোচনার কেন্দ্রে। কারণ তাদের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। মৃত্যুর জন্য এক ধরনের অণুজীবকে সন্দেহ করা হচ্ছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, এক ধরনের ‘ব্রেইন খাদক’ অ্যামিবা ‍সৃষ্ট এক বিরল ‘ইনফেকশন’র (ক্ষত) কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, যুক্তরাজ্যের নেব্রাস্কা রাজ্যের ডগলাস কাউন্টিতে চলতি সপ্তাহে একটি শিশুর মৃত্যু হয়। অস্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ায় শিশুটির নাম, পরিচয় ও বয়স প্রকাশ করা হয়নি। ডগলাস কাউন্টির স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে গত বুধবার (১৭ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বলা হয়, চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, নেগলারিয়া ফোলেরি অ্যামিবা সৃষ্ট মেনিনজোএনসেফালাইটিস নামে এক ভয়ানক ইনফেকশনের কারণে শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটি গত সপ্তাহে (৮ আগস্ট) এলখর্ন রিভার (নেব্রাস্কার ওমাহা অঞ্চলের একটি নদী) নামে একটি নদীর অগভীর এলাকায় সাঁতার কাটতে গিয়েছিল। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মনে করছেন, ওই নদী থেকেই নেগলারিয়া ফোলেরি অ্যামিবা বা অণুজীব দিয়ে সংক্রমিত হয় সে। সাতার কেটে আসার পাঁচদিন পর তার শরীরে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। চিকিৎসকরা জানান, লক্ষণ প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন পরই তার মৃত্যু হয়।

নেগলারিয়া ফোলেরি অ্যামিবা এমন এক ধরনের অ্যামিবা বা অনুজীব যা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মিঠাপানির হ্রদ থেকে শুরু করে নদী, খাল-বিল-পুকুর সবখানেই পাওয়া যায়। এর আগে গত মাসে আইওয়ার সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গিয়ে নেগলারিয়া ফোলেরি অ্যামিবায় আক্রান্ত মিসৌরির এক বাসিন্দা। তার শরীরে অনুজীবটি শনাক্ত হওয়ার পরপরই মারা যান তিনি।

এ দুই ঘটনার আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে একইভাবে টেক্সাসে ১০ বছরের একটি মেয়ে শিশু হাসপাতালে মারা যায়। লিলি মায়ে আভান্ত নামের শিশুটি ৫ সেপ্টেম্বর ছুটির দিনে রাজ্যের উত্তরে একটি হৃদে সাঁতার কাটতে যায়। সাঁতার কেটে আসার কয়েকদিন পরই তার জ্বর ও মাথা ব্যথা শুরু হয়। এরপর স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি হলে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরও অবনতি হলে তাকে ফোর্ট ওয়ার্থের কুক চিলড্রেন হসপিটালে ভর্তি করা হয়। ছয়দিন পর ১১ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়।

টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট হেলথ সার্ভিস এক বিবৃতিতে জানায়, লিলির মস্তিষ্কে ব্রেইন খাদক অ্যামিবা প্রবেশ করে মস্তিষ্কের কোষ খেয়ে ফেলেছিল। নাক দিয়ে এই অ্যামিবা ব্রেইনে ঢুকে পড়ে।’ তারা আরও জানায়, অ্যামিবা শরীরে প্রবেশের প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথম ব্রেইনে জটিল ইনফেকশন ধরা পড়ে। নদী ও লেকে লাখ লাখ লোক সাঁতার কাটেন। তবে ব্রেইন খাদক অ্যামিবার সংক্রমণ বিরল ঘটনা।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *