লাইফস্টাইল ডেস্ক :
ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল এখন সবাই। ঘামে জীবন অতিষ্ঠ। গরমের এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই বেছে নেন ঠান্ডা পানি। রাস্তার আশপাশে, দোকানে কিংবা বাসে তাই আজকাল প্রায়ই দেখা যায় ঠান্ডা পানি আর শরবত বেচাকেনার ধুম। আপনিও গরমে একটু প্রশান্তি পেতে হাত বাড়াচ্ছেন সেসব ঠান্ডা পানীয়র দিকে। কিন্তু এই অভ্যাস আপনার জন্য কতটা ক্ষতিকর, তা কি আপনি জানেন?
যদিও এখন বর্ষাকাল চলছে, তবে হালকা ইলশে গুঁড়ির বৃষ্টিতে তাপমাত্রা না কমে বরং আরও বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে এক গ্লাস ঠান্ডা পানিতেই যেন পরম শান্তি।
চিকিৎসকরা বলছেন, রোদ থেকে ঘুরে এসেই ঢক ঢক পানি পান করাটা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। এতে সাময়িক আরাম মিললেও পরবর্তী সময়ে তার বিরূপ প্রভাব শরীরে দেখা দেয়। এগুলো হলো:
১. প্রচণ্ড গরমে শুধু পরিবেশের নয়, আমাদের শরীরের তাপমাত্রাও বেশি থাকে। এ সময় হঠাৎ করে ঠান্ডা পানি পান করার ফলে আমাদের শরীরের তাপমাত্রার সঙ্গে ঠান্ডা পানির একটি অসামঞ্জস্যতা তৈরি হয়।
২. বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অসামঞ্জস্যতা শরীর মেনে নিতে পারে না। যার কারণে হঠাৎ ঠান্ডা খেলে কিছুদিনের মধ্যেই এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে সর্দি, ঠান্ডা, কাশির সমস্যা দেখা দেয়।
৩. হঠাৎ ঠান্ডা পানি পান করার কারণে শ্বাসনালিতে শ্লেষ্মার অতিরিক্ত আস্তরণ তৈরি হয়। যার ফলে শ্বাসযন্ত্রজনিত বিভিন্ন সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়।
৪. অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাসে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দেয়।
৫. বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠান্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাসে হতে পারে হজমের সমস্যা, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি।
৬. ঠান্ডা পানি মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ করতে বাধা দেয়। এর ফলে মাথার কোষে রক্ত চলাচলও ব্যাহত হতে পারে।
৭. ঠান্ডা পানি খাওয়ার সঙ্গে থাইরক্সিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। তাই নিয়মিত যদি আপনার ঠান্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তবে টনসিল গ্রন্থি ফুলে যাওয়া কিংবা থাইরয়েডের সমস্যা হতে পারে।
৮. চিকিৎসকরা বলছেন, অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খেলে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবারের মতো স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে।
৯. এ ছাড়া অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি খাওয়ার অভ্যাসে আমাদের আরও যে ক্ষতি হতে পারে তা হলো দাঁত ও মাড়ির সমস্যা। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিতে দাঁতের ভেগাস নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যার ফলে আমাদের হার্টের গতির ওপরও খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করে।
এসব ক্ষতি যে শুধু ঠান্ডা পানি খেলেই হবে, এমনটা কিন্তু নয়। ঠান্ডা যেকোনো পানীয়, আইসক্রিমেও এ ধরনের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই এসব ঠান্ডা পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদি গরমে আরাম পেতে চান, তবে স্বাভাবিক তাপমাত্রার কমলার রস খেতে পারেন।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply