ডেস্ক রিপোর্ট :
গাজার ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত নতুন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের এক প্রাক্তন নিরাপত্তা ঠিকাদার বিবিসিকে জানিয়েছেন, তিনি একাধিকবার তার সহকর্মীদের নিরস্ত্র ও ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালাতে দেখেছেন। এছাড়া ওয়াচটাওয়ার থেকে প্রহরীরা মেশিনগান দিয়ে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের ওপর গুলি চালিয়েছেন, কারণ তারা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছিলেন।
প্রাক্তন ঠিকাদার দাবি করেছেন, গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ম্যানেজাররা এই ঘটনা এড়িয়ে গিয়ে বলেছিলেন, ওই ফিলিস্তিনি হয়তো “হোঁচট খেয়েছেন” বা “ক্লান্ত হয়ে পড়ে গিয়েছেন”।
জিএইচএফ এসব অভিযোগকে “মিথ্যা” দাবি করে বিবৃতিতে বলেছে, তাদের বিতরণকেন্দ্রে কোনো বেসামরিক ব্যক্তি গুলির শিকার হননি। তারা আরও জানায়, অভিযোগকারী ব্যক্তি “অসদাচরণের কারণে চাকরি হারানো অসন্তুষ্ট প্রাক্তন কর্মী”, যদিও অভিযোগকারী তার বেতন রশিদের মাধ্যমে প্রমাণ দিয়েছেন যে চাকরি ছাড়ার দুই সপ্তাহ পরও তাকে বেতন দেওয়া হয়েছে।
এই প্রাক্তন ঠিকাদার বলেন, জিএইচএফ-এর চারটি বিতরণকেন্দ্রে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন এবং নিয়ম-কানুনহীন একটি পরিবেশ দেখেছেন। এক দলনেতা কর্মীদের বলেন: “আপনি হুমকি অনুভব করলে গুলি চালান – মেরে ফেলুন, পরে প্রশ্ন করবেন।”
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের “জম্বি হোর্ডস” (অমূল্য, মর্যাদাহীন ভিড়) বলে ডাকতেন অনেকেই। ত্রাণকেন্দ্রে মানুষ কখনো স্টান গ্রেনেডের ধাতব অংশের আঘাতে, কখনো মেস স্প্রে বা ব্লেডযুক্ত তারের আঘাতে গুরুতর আহত হতে দেখেছেন তিনি। এক নারীর মাথায় স্টান গ্রেনেডের ধাতব অংশ লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং নড়াচড়া করছিলেন না বলে জানান এই কর্মী।
জিএইচএফ দাবি করেছে বিতর্কিত ফুটেজে শোনা গুলির শব্দ তাদের কর্মীদের নয়, ইসরায়েলি বাহিনীর।
এদিকে, অক্সফাম ও সেভ দ্য চিলড্রেনসহ ১৭০টির বেশি দাতব্য সংস্থা জিএইচএফ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে, অভিযোগ করেছে যে ইসরায়েলি বাহিনী এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী নিয়মিত ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালায়, যখন তারা ত্রাণ সংগ্রহের চেষ্টা করে।
জিএইচএফ জানিয়েছে, তারা পাঁচ সপ্তাহে ৫ কোটি ২০ লাখের বেশি খাবার বিতরণ করেছে এবং অন্য সংস্থাগুলোর ত্রাণ “লুট হয়ে যাচ্ছে”, যা তারা ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
ইসরায়েল বলছে, জিএইচএফ ব্যবস্থা হামাসের কাছে না গিয়ে সরাসরি মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছায়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হয়, যাতে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৫৭ হাজার ১৩০ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply