আরাফাতের ময়দানে সমবেত ২০ লাখ হাজি

ডেস্ক রিপোর্ট :
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১৫ লাখ হজযাত্রীসহ প্রায় ২০ মানুষ আজ বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের মক্কা নগরীর পবিত্র আরাফাত ময়দানে সমবেত হয়েছেন। হজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে হাজিরা আজ সারা দিন আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন। তারা ইবাদত বন্দেগি ও দোয়া প্রার্থনায় মশগুল থাকবেন। এদিন জামাতে জোহরের নামাজ শেষে হজের খুতবা প্রদান করা হবে। এই আরাফাতের ময়দানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের বাইরে থেকে ১৫ লাখের বেশি হজযাত্রীর আগমন নিশ্চিত করছে সৌদি প্রশাসন। হজযাত্রীদের চলাচল সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিস্তৃত ট্র্যাফিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায় রয়েছে হজযাত্রীদের প্রধান রুটগুলো এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ আচার পালনে সুশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিশ্চিত করা। আকাশ থেকেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নজরদারি করা হচ্ছে।

সৌদিতে তাপমাত্রা প্রায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হলে সব হজযাত্রীদের কাছাকাছি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর শরণাপন্ন হতে আহ্বান জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র খালিদ আল-তালা বলেন, জরুরি অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা এবং নিবিড় চিকিৎসা কেন্দ্রসহ ৯৮ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এ ছাড়া তিনটি অতিরিক্ত ফিল্ড হাসপাতাল রয়েছে, যেগুলোর সম্মিলিত ধারণক্ষমতা ১ হাজার ২০০ শয্যা। মন্ত্রণালয় ৭১টি জরুরি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন এবং ৯০০টি অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে সহায়তা করার জন্য ১১টি মেডিকেল ইভাকুয়েশন উড়োজাহাজ নিয়োজিত করা হয়েছে।

মুখপাত্র খালিদ আল-তালা আরও বলেন, ৫০ হাজারের বেশি চিকিৎসা ও কারিগরি কর্মী হজযাত্রীদের সেবায় নিযুক্ত রয়েছে।

এর আগে গতকাল বুধবার মিনায় সমবেত হন হাজিরা। সেখানে সারা রাত তাঁবুতে অবস্থান করে নামাজ আদায়, জিকির ও গুনাহ থেকে মুক্তি লাভের জন্য মোনাজাত করেন হজযাত্রীরা। এরপর সেখানে ফজর নামাজ আদায় করেই তারা রওনা দেন পবিত্র আরাফাত ময়দানের উদ্দেশে। মুহুর্মুহু উচ্চারণ করছেন—‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা, ওয়ান্‌নি’মাতা লাকা ওয়াল্‌মুল্‌ক্‌, লা শারিকা লাকা’। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।

সারা দিন বিশ্বের লাখ লাখ হজযাত্রী আরাফাত ময়দানে সম্মিলিতভাবে আল্লাহর ইবাদতে নিজেদের নিমগ্ন রাখবেন। এরপর সন্ধ্যায় হজযাত্রীরা মুজদালিফায় যাত্রা শুরু করবেন। এটি আরাফাত ও মিনার মধ্যে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হজযাত্রীরা মুজদালিফায় রাত কাটাবেন এবং ছোট পাথর সংগ্রহ করবেন। মিনায় জামারাত স্তম্ভে শয়তানকে লক্ষ্য করে এসব পাথর নিক্ষেপ করবেন তারা।

মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত মিনা, যা মক্কা ও মুজদালিফার মধ্যবর্তী। মিনা জামারাত এলাকা দ্বারা বেষ্টিত, যার বিপরীত দিকে রয়েছে মুহাসির উপত্যকা। ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী, মুহাসির নামটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনার থেকে এসেছে। ৫৭০ সালের দিকে কাবা ধ্বংসের ব্যর্থ প্রচেষ্টার সময় আবিসিনিয়ার আবরাহার হাতিটি এখানেই এস থামে যায়। আর এ বছরেই ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *