‘ট্রাম্প আতঙ্কে’ বাড়ছে ইউরোপে যাওয়ার আবেদন

ডেস্ক রিপোর্ট :
নিউ ইয়র্ক সিটি উপশহরের বাসা থেকে শিক্ষাবিষয়ক পরামর্শক ৬৯ বছর বয়সী ড্যাভিস বলেন, ‘আমরা এ দেশকে ভালোবাসি, তবে এর যা অবস্থা হয়েছে, তাকে নয়।’ ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে লড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর জীবন পরিবর্তনকারী এক সিদ্ধান্ত নেয় ডরিস ড্যাভিস ও সুসি বার্টলেট যুগল।

নিউ ইয়র্ক সিটির বাসিন্দা ভিন্ন বর্ণের এ লেসবিয়ান যুগল একমত হন যে, ট্রাম্প জিতলে বিদেশ চলে যাবেন তারা। এ যুগলের ভাষ্য, প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে দেখতে চেয়েছিলেন তারা, কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর তারা দেখলেন, তিনি জাতিগত সমতা ও এলজিবিটিকিউ+ লোকজনের জন্য নেওয়া নীতিগুলোর ইতি টেনেছেন।

নিউ ইয়র্ক সিটি উপশহরের বাসা থেকে শিক্ষাবিষয়ক পরামর্শক ৬৯ বছর বয়সী ড্যাভিস বলেন, ‘আমরা এ দেশকে ভালোবাসি, তবে এর যা অবস্থা হয়েছে, তাকে নয়। ‘আপনার পরিচয় আক্রমণের শিকার হলে ক্ষোভ ও হতাশার ব্যক্তিগত অনুভূতি তৈরি হয়।’

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ইউরোপে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে একজন অভিবাসন আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলছে এ যুগল। দক্ষিণ ইউরোপের জীবনযাপনে আকৃষ্ট এ দুই নারীর সবচেয়ে পছন্দের গন্তব্য পর্তুগাল ও স্পেন। দুজনই ডিজিটাল নোম্যাড বা অবসর ভিসার খোঁজে আছেন।

দুজনের মধ্যে কনিষ্ঠ বার্টলেটের বয়স ৫২ বছর। নিজ এলাকা ছেড়ে যেতে কষ্ট হবে বলে রয়টার্সকে জানান ড্যাভিস। তিনি বলেন, ‘বাইরে যাওয়ার বিষয়টি আমাকে ব্যথিত করে, কিন্তু এটি একই সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকে এমন এক পরিস্থিতি, যা অগ্রহণযোগ্য।’

সরকারি ভিসা ও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত ডেটা সংগ্রহের পাাশাপাাশি লোকজনকে স্থানান্তর নিয়ে কাজ করা আটটি প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি জানিয়েছে রয়টার্স। এসব ডেটা ও বক্তব্যের ভিত্তিতে বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, দেশ ছেড়ে ইউরোপে যাওয়ার চিন্তা করা অ্যামেরিকানদের সংখ্যা বাড়ছে। যদিও ৩৪০ মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশে এ সংখ্যাটা খুব বেশি নয়।

চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে আয়ারল্যান্ডের পাসপোর্টের জন্য অ্যামেরিকানদের আবেদন ছিল এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
আয়ারল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অব ফরেইন অ্যাফেয়ার্সের ডেটা অনুযায়ী, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে গড়ে প্রায় চার হাজার ৩০০ আবেদন হয়েছে পাসপোর্টের জন্য। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।

ফ্রান্স সরকারের ডেটা অনুযায়ী, দেশটিতে দীর্ঘদিন বসবাসের জন্য অ্যামেরিকানদের ভিসার আবেদন ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৩৮৩তে। গত বছর একই সময়ে সংখ্যাটি ছিল এক হাজার ৯৮০।

জানুয়ারি থেকে মার্চ নাগাদ দুই হাজার ১৭৮টি দীর্ঘমেয়াদি ভিসার আবেদন গ্রহণ করে ফ্রান্সের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আগের বছর একই সময়ে সংখ্যাটি ছিল এক হাজার ৭৮৭।

বৃটেইনের ক্ষেত্রে সর্বশেষ ডেটা পাওয়া গেছে ২০২৪ সালের শেষ তিন মাসের। এ সময়ে বৃটেইনের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন এক হাজার ৭০৮ জন অ্যামেরিকান, যা গত দুই দশকে সর্বোচ্চ।

স্থানান্তরে সহায়তাকারী কোম্পানি ও ওয়েবসাইটগুলোর ডেটা অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বছরগুলোর যেকোনো একটি সময়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অ্যামেরিকান বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন রাজনৈতিক বিভাজন ও বন্দুক সহিংসতার মতো বিষয়কে।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *