ডেস্ক রিপোর্ট :
পরম করুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে। বছর পেরিয়ে আবার এলো পবিত্র মাহে রমজান। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন এ মাসে যথাসম্ভব ইবাদত বন্দেগি করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই প্রত্যেকের কাম্য। বেশি বেশি ইবাদত করার জন্য চাই সুস্থ দেহ আর সুস্থ দেহ পাবার অন্যতম শর্ত হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্য ও পানীয় গ্রহন। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে রমজানের স্বাস্থ্য টিপস নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা।
আপনার প্রতিদিনের গ্রহন করা খাদ্য স্বাস্থ্যসম্মত হচ্ছে কি না বা আপনার দেহের ক্ষয় পূরণের জন্য পর্যাপ্ত কি না; নিশ্চিত হওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় একটি সুষম খাদ্যের তালিকা তৈরি করা এবং সে তালিকা অনুযায়ী প্রতিদিন খাবার গ্রহন করা। তাই এখনো যারা রমজানের খাদ্য তালিকা তৈরি করবো বলেও তৈরি করেন নি; আশা করা যায় এ লেখা কিছুটা হলেও তাদের সাহায্য করবে। আর যারা ইতিমধ্যে তৈরি করে ফেলেছেন, তারা চাইলে একটু মিলিয়ে দেখতে পারেন।
* প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা উচিত। যা এ রমজানের মধ্যে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়টাতে পান করা প্রয়োজন।
* উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশী পরিমানে গ্রহণ করা ভালো।
* কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খাদ্য তালিকা থেকে একেবারে বাদ না দিয়ে প্রতিদিন স্বল্প পরিমাণে গ্রহণ করা দরকার।
* এ সময় বেশী বেশী পটাসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ দেহের জন্য অপরিহার্য।
* বাজার এখন নানান মৌসুমী ফলে ভরপুর। যত বেশী সম্ভব আমরা ফল খেতে পারি। ফল একদিকে শরীরের পানির চাহিদা মেটাবে, অন্যদিকে এর প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টিগুনও রয়েছে।
* দুধে অ্যালার্জি বা হজমের সমস্যা না হলে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পান করা যেতে পারে। দুধ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাধিক উপকারী।
* ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাবার যেমন ইসবগুল, তকমা, সালাদ এ সময়টাতে বেশি বেশি গ্রহণ করা দরকার।
যে খাদ্য বা অভ্যাসসমূহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারেঃ
* ভাজাপোড়া খাবার সম্পূর্ন ভাবে বর্জন করাই শ্রেয়।
* এ সময়টাতে বা যে কোনো সময়ে বাইরের কেনা খাবার না খাওয়াই স্বাস্থ্যসম্মত।
* ইফতার, রাতের খাবার বা সেহেরী সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি খেয়ে হাসফাস না করে, স্বাভাবিক পরিমাণে খাওয়াটাই উত্তম।
* কোল্ড ড্রিংকস, প্যাকেটজাত জুসের পরিবর্তে বাড়িতে তৈরি তাজা ফলের শরবত খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
* ফাস্টফুড সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
* এ সময়টাতে চা, কফি না খাওয়াই ভালো। তবে একান্তই খেলে তা ইফতার এবং রাতের খাবারের মাঝে খেতে হবে, কেননা চা, কফি শরীর থেকে পানি বের করে দিয়ে পানি শূন্যতা তৈরি করে।
তবে যাদের শারীরিক কোনো সমস্যা বা অন্য কোনো কারনে ডাক্তারের সান্নিধ্যে থাকতে হয়, তাদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলা উত্তম। যে সকল গর্ভবতী মায়েরা আছেন, তারা সুস্থ অবস্থায় থাকলে সুষম খাদ্য ও প্রচুর পরিমানে পানি পান করে সহজেই রোজা রাখতে পারেন। তবে কোনো মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অবশ্যই আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া দরকার।
যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আছেন তাদের না খেয়ে বা অল্প খেয়ে রোজা রাখতে হবে এমন কোনো কথা নেই। কিন্তু অবশ্যই ডায়াবেটিক ফুড খাবেন। বিশেষ করে সেহেরীতে চাইলে পর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ করতে পারেন, কিন্তু অবশ্যই তা ডায়াবেটিস ফুড হতে হবে।
রোজার সময়টাতে খাদ্য ও পানীয় গ্রহনে হঠাৎ বড় একটি পরিবর্তন হয়। অনেক সময়ই দেখা যায় কারো কারো শরীর তা সহ্য করতে না পেরে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই এ সময়টাতে নতুনভাবে কোনো ডায়েট গ্রহণ করা উচিত নয়। যারা আগে থেকেই নির্দিষ্ট কোনো ডায়েটে অভ্যস্থ, তাদের কথা আলাদা।
ব্যায়ামের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যারা ব্যায়াম করে অভ্যস্থ তাদের জন্য এ মাসে দিনে ব্যায়াম না করাই শ্রেয়। কারণ শারীরিক কসরতের পর পানি পিপাসা অনেক বেশী অনুভূত হয়। এমনকি ইফতারের আগেও ব্যায়াম নয়। সবচেয়ে ভালো উপায়, হালকা ইফতার করে প্রয়োজন মতো ব্যায়াম করে ভারী রাতের খাবার গ্রহণ করা।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply