মিল গেটে আগামীকাল সোমবার থেকে এই দাম কার্যকর হলেও খুচরা বাজারে এই দামে তেল পেতে আরো দুই একদিন সময় লাগবে বলে জানান সচিব। খুচরা পর্যায়ে পাঁচ লিটারের তেলের বোতলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬০ টাকা। এছাড়া পাম অয়েলের দাম নির্ধারণের বিষয়ে মঙ্গলবার আবার বৈঠক বসবে বলে জানানো হয়েছে। ঈদের পর তেলের দাম আবার বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব। দেশে পর্যাপ্ত তেল মজুদ আছে জানিয়ে ঈদের আগে তেলের সংকট হবে না বলছেন ব্যবসায়ীরা।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকায় পাইকারি পর্যায়ে সয়াবিনের দাম কেজিতে ৯ টাকা কমে যায়। সেসময় এক দিনের ব্যবধানে মণপ্রতি সব ধরনের ভোজ্যতেলের দাম কমে যায় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। যদিও তখন ভ্যাট কমানোর সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হলেও মিল থেকে রেট আসেনি। তার আগেই বিক্রি বাড়াতে দাম কমাতে বাধ্য হয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।
এর আগে বুধবার (১৬ মার্চ) সয়াবিন তেল ও অপরিশোধিত পাম তেল আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পরিশোধিত সয়াবিন তেল, অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, অপরিশোধিত পাম তেল এবং অন্যান্য পরিশোধিত পাম তেল আমদানিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো।
এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বোতলজাত প্রতিলিটার সয়াবিন তেলের মূল্য ১৬৮ টাকা এবং পাঁচ লিটারের বোতল ৭৯৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল। আর খোলা তেলের মূল্য নির্ধারণ করেছিল প্রতি লিটার ১৪৩ টাকা।
তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার দোহাই দিয়ে মার্চের শুরু থেকে আরও দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে সরবরাহ সংকটও তৈরি করা হয়। আড়তদার ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা মিল গেইট থেকে তেল সরবরাহ না দেওয়ার অভিযোগ করা হয়। তখন সরকার নির্ধারিত আগের দামর চেয়ে লিটারে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়।
দাম বেড়ে যাওয়ায় ও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় খোলা সয়াবিন তেল অনেক জায়গায় মিলছিল না বলে খবর আসে। অনেক বাজারে তেলের বোতল খুলে খুচরায় খোলা আকারে প্রতি লিটার ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পযর্যন্ত দরে বিক্রি করা হয়।
এরপর সরকারের দিক থেকে দাম নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা বাড়ে। বাজারে অভিযানসহ তেল মজুদের জন্য জরিমানা করা হয় ব্যবসায়ীদের। সয়াবিন তেল সরবরাহ ও বিপণনের সব স্তরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সরবরাহ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন তেল পরিশোধনকারী কারখানাতেও সরেজমিনে যান ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা।
এসব উদ্যোগে সরবরাহ সংকট কমে সব বাজারে আবার তেল মিলতে শুরু করে; দামও কিছুটা কমে। তবে তা আগের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি।
দেশের বাজার পরিস্থিতি ও আন্তজার্তিক বাজারে ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষাপটে অতিরিক্ত দাম কমাতে সরকার ভোজ্যতেল আমদানিতে ১০ শতাংশ ভ্যাট তুলে ৫ শতাংশে নামায় এবং বিপণন ও পরিশোধন পর্যায় থেকে ভ্যাট তুলে নেয়।
এটিভি বাংলা/ফয়সাল
Leave a Reply