সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৭৮ বছর বয়সী বর্ষীয়ান এই নেতা। তার মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে আসের দলের নেতা কর্মীসহ শুভাকাঙ্খীরা।
জয়নাল হাজারীর একান্ত রাজনৈতিক সহযোগী শাখাওয়াত হোসেন ভুঁঞা এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বার্ধক্যজনিত নানা রোগে তিনি গত কয়েকদিন যাবত রাজধানীর হাসপাতালটিতে ভর্তি ছিলেন।
মৃত্যুকালে জয়নাল হাজারীর কোন সন্তান ছিল না। তিনি ছিলেন চিরকুমার। ফেনীর মাস্টারপাড়ায় তার একটি বাড়ি রয়েছে। আগামীকাল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জয়নাল হাজারীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তার ওসিয়ত অনুযায়ী ফেনীর মুজিব উদ্যানে তাকে দাফন করা হবে।
জয়নাল হাজারীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তারা।
এছাড়া, এক শোকবার্তায় জয়নাল হাজারীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজনীতির হাতে খড়ি স্কুলজীবনে, ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৮৪ সালে তরুণ বয়সে দায়িত্ব পান ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের। জয়নাল হাজারী ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রায় বিশ বছরের বেশি সময় ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
ছিলেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযুদ্ধা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ আসন থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে তিনবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালের ১৭ই আগস্ট যৌথবাহিনীর অভিযানের মুখে ফেনী থেকে দেশান্তরী হন এক সময়ের দাপুটে এই আওয়ামী লীগ নেতা। ২০০৪ সালে হাজারীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
২০০৯ সালে মামলার স্তূপ মাথায় নিয়ে নিয়ে দেশে ফিরেন। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। একে একে সব মামলা থেকে অব্যাহতি পান তিনি। একপর্যায়ে ফেনী ছেড়ে ২০১০ সাল থেকে রাজধানী ঢাকায় বসবাস শুরু করেন তিনি। জয়নাল হাজারী ‘হাজারিকা প্রতিদিন’ নামে একটি দৈনিক পত্রিকা সম্পাদনাও করেন। দেড় দশক পর ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যপদ পান জয়নাল হাজারী।
এটিভি/আনন্দ ইসলাম
Leave a Reply