পরাজয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক :
নিজেদের প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে কখনও নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। সাকিব-তামিমরা যা করতে পারেননি, তাই এবার করে দেখাতে চেয়েছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সিরিজের শুরুটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশকে ৪৪ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল কিউইরা।

আজ রোববার (১৭ ডিসেম্বর) ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভাল মাঠে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সাত উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৩৯ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের সংগ্রহ বেড়ে দাঁড়ায় ২৪৫ রান। রান তাড়ায় নেমে ৩০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০০ রানে থামে বাংলাদেশ।

৩০ ওভারে ২৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া বাংলাদেশের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং। সেই কাজটা আরও কঠিন করেন টপ অর্ডার ব্যাটাররা। বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই সৌম্যর উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের বদলি হিসেবে নিউজিল্যান্ডের সিরিজে দলে সৌম্যকে নেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে প্রথম ওয়ানডেতে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। খরুচে বোলিংয়ের পর এবার ব্যাট হাতেও ফিরলেন খালি হাতে। চার বল খেললেও রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।

এরপর অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন এনামুল হক বিজয়। তবে তাদের জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় ইশ শোধির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন শান্ত। আউটের আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ১৫ রান।

এরপর লিটন দাসকে নিয়ে ভালোই ব্যাটিং করছিলেন বিজয়। তবে ফের ছন্দপতন, দলীয় ৮০ রানের মাথায় বিজয় ও ৯২ রানের মাথায় লিটনকে হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারীরা। ৩৯ বলে ৪৩ করেন বিজয়। আর লিটনের ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ২২ রান।

অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। ১০ বলে চার রান করে রবীন্দ্রর বলে ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে ফেরেন মুশফিক। এরপর তাওহিদ হৃদয় আর আফিফ হোসেন মিলে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। গড়েন ৩৮ বলে ৫৬ রানের জুটি। তবে, দলীয় ১৫৯ রানে ২৭ বলে ৩৩ রান করে ফেরেন হৃদয়। এরপর লেজের সারির ব্যাটারদের চেষ্টায় দলীয় স্কোর ২০০ ছাড়ায় বাংলাদেশের।

এর আগে, টসের পরপরই বৃষ্টি নামায় সোয়া এক ঘণ্টা দেরিতে চার ওভার কমিয়ে প্রথম দফায় খেলা শুরু হয়। ব্যাটিংয়ে নামতে না নামতেই পেসার শরিফুল ইসলামের তোপের মুখে পড়ে কিউইরা। প্রথম ওভারের চতুর্থ আর শেষ বলে দুই ব্যাটারকে সাজঘরে পাঠান এই বাঁহাতি বোলার। রাচিন রবীন্দ্র ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমকে। আর হেনরি নিকোলস ধরা পড়েছেন দ্বিতীয় স্লিপে এনামুল বিজয়ের হাতে। দুজনই আউট শূন্য রানে। দলীয় ৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে সেখান থেকে লাথাম আর ইয়ংয়ের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড।

দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টি নামার আগেই উইকেটে থিতু হন এই দুই ব্যাটার। ফের বৃষ্টির বাধায় বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকায় কমে আরও ছয় ওভার। এবার ম্যাচ নেমে আসে ৪০ ওভারে। তারপর ব্যাটিংয়ে নেমে উইলকে নিয়ে শতরানের জুটি গড়েন লাথাম। ১৯.২ ওভারের সময় তৃতীয় বারের মতো বৃষ্টি বাগড়া দেওয়ায় ফের খেলা বন্ধ থাকে প্রায় দুই ঘণ্টা। সেসময় স্কোরবোর্ডে কিউইদের রান ছিল ১০৮।

বৃষ্টি শেষে ম্যাচ শুরু হলেও এই দফায় কমে আরও ১০ ওভার। ৩০ ওভারের ম্যাচে ঝড়ো ব্যাটিং করেন লাথাম-ইয়ং জুটি। তবে, দলীয় ১৭৬ রানের মাথায় ৭৭ বলে ৯২ করা লাথামকে ফিরিয়ে কিছুটা স্বস্তি দেন মিরাজ। তবে সেই স্বস্তি বেশিক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হতে দেননি মার্ক চাপম্যান।

ক্রিজে এসেই প্রথম বল থেকে মিরাজ-মুস্তাফিজদের ওপর চড়াও হন এই বাঁহাতি ব্যাটার। আর তাকে সঙ্গ দেন ইয়ং। এই দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বড় স্কোরের দিকে এগিয়ে যায় কিউইরা। যদিও দলীয় ২৩০ রানের মাথায় রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন চাপম্যান। আউটের আগে করেন ১১ বলে ২০ রান। তার বিদায়ের পরই ৮২ বলে নিজের শতক পূরণ করেন ইয়ং। ৮৪ বলে ১০৫ রানের ইনিংস খেলে রান আউট হন তিনি। এরপর রান আউট হয়ে ফেরেন টম ব্লান্ডেল। শেষমেশ সাত উইকেটে ২৩৯ রানে থামে কিউইরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড : ৩০ ওভারে ২৩৯/৭ (ইয়ং ১০৫, রবীন্দ্র ০, নিকোলস ০, লাথাম ৯২, চাপম্যান ২০, ক্লার্কসন ১, ব্লান্ডেল ১, মিলনে ১ ; শরিফুল ৬-১-২৪-২, হাসান ৬-০-২৮-০, মুস্তাফিজুর ৬-০-৪৭-০, সৌম্য ৬-০-৬৩-০, মিরাজ ৫-০-৫৩-১, আফিফ ১-০-১৭-০)

বাংলাদেশ : ৩০ ওভারে ২০০/৯ (সৌম্য ০, বিজয় ৪৩, শান্ত ১৫, লিটন ২২, তাওহিদ ৩৩, মুশফিক ৪, আফিফ ৩৮, মিরাজ ২৮, শরিফুল ৫, হাসান ৪; মিলনে ৬-০-৪৬-২, ডাফি ৬-০-৩৯-১, ‍উইলিয়াম ৫-০-৩৫-১, শোধি ৬-০-৩৫-২, ক্লার্কসন ৪-০-২৪-২, রবীন্দ্র ৩-০-২০-১)

ফলাফল : বৃষ্টি আইনে নিউজিল্যান্ড ৪৪ রানে জয়ী।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *