খেলাধুলা প্রতিবেদক:
আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু করলো বাংলাদেশ। আফিফ ও মিরাজের ব্যাটে চড়ে প্রথম ওয়ানডেতে দারুন এক জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।বাংলাদেশের হয়ে সপ্তম উইকেটে আফিফ ও মিরাজের ম্যাচজয়ী অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের রেকর্ড পার্টনারশিপে দারুন জয় পায় তামিম বাহিনী। আফগানদের শক্ত বোলিং ইউনিট শত চেষ্টা করেও চিড় ধরাতে পারেনি আফিফ-মিরাজের সংকল্পে। সাত বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
আফিফ অপরাজিত থাকেন ৯৩ রানে। এই ম্যাচ উইনিং ইনিংসের জন্য মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার ওঠে তার হাতে। আর মিরাজের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৮১ রানের ঝকঝকে ইনিংস। এতে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান তিনি।
এই জয়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে, চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জয়ের জন্য ২১৬ রান তাড়া করতে নেমে ৪৫ রানেই ছয় ব্যাটারকে হারিয়ে রীতিমত ধুঁকছিলো টাইগাররা। আফগান পেসার ফজল হক ফারুকির বোলিং তোপে শুরুতেই ফিরে যান ওপেনার লিটন দাস, আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও ইয়াসির আলী। তাদের সংগৃহীত রান যথাক্রমে ১, ৮, ৩ ও ০। ফারুকি একাই তুলে নেন এই ৪টি উইকেট।
এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব আল হাসান। ১০ রান করে স্পিনার মুজিব-উর রহমানের বলে বোল্ড হন তিনি। কিছুক্ষণের মধ্যে বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ। রশিদ খানের বলে গুলবাদিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৮ রান করে ফেরেন তিনি।
এসময় মনে হচ্ছিলো একশ’র কোটাও পার করতে পারবে না টাইগাররা। তারপরই আফিফ হোসেন ও মেহেদি মিরাজের ব্যাটে চড়ে বিপর্যয় সামলে ওঠে বাংলাদেশ।
আফগানদের পক্ষে ফারুকি ৪টি, রশীদ খান ১টি ও মুজিব ১টি উইকেট শিকার করেন।
এর আগে, তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে সবকটি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশকে ২১৬ রানের টার্গেট দেয় আফগানিস্তান। আফগানদের ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই আঘাত হানেন বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম দুই ওভার দেখেশুনে কাটানোর পর তৃতীয় ওভারে তৃতীয় বলে মোস্তাফিজের ওপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ। কিন্তু মিড উইকেটে তুলে মারতে গিয়ে বল আকাশে ভাসিয়ে দেন গুরবাজ। ক্যাচটি লুফে নেন তামিম ইকবাল। গুরবাজ ফেরেন ৭ রানে। এরপর দেখেশুনে খেলে রহমত শাহকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৫ বলে ৪৫ রানের জুটিও গড়েন আফগান ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান।
বাংলাদেশ শিবিরে দুশ্চিন্তা ক্রমেই বাড়ছিল। অবশেষে এই জুটিটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের ১৪তম ওভারে তাকে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ইয়াসির আলির ক্যাচ হন জাদরান (২৩ বলে ১৯)। ইয়াসির প্রথম দফায় ক্যাচটি তালুবন্দি করতে না পারলেও পরে অনেকটা শুয়ে বুকের সঙ্গে মিশিয়ে বল ধরে ফেলেন।
রহমত শাহ আর হাশমতউল্লাহ শহিদি এরপর ধীরগতির এক জুটি গড়েন। ৫২ বলে গড়া তাদের ২৩ রানের জুটিটি বিচ্ছিন্ন হয় ইনিংসের ২২তম ওভারে। তাসকিন আহমেদের গতিতে বিভ্রান্ত হয়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দেন রহমত। ৩৪ রান করতে তিনি খেলেন ৬৯টি বল। এরপর ঘন ঘন বিরতিতে উইকেট যেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ২১৫ রানে থামে আফগানরা।
টাইগারদের হয়ে মুস্তাফিজ নেন তিনটি, সাকিব আল হাসান, শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ নেন দুইটি করে উইকেট। আর মাহমুদুল্লাহ নেন একটি উইকেট।
বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (উইকেট কিপার), ইয়াসির আলী, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, মেহেদি হাসান মিরাজ, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মকুস্তাফিজুর রহমান।
আফগানিস্তান একাদশ: রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেট কিপার), ইব্রাহিম জাদ্রান, রহমত শাহ, হাসমতুর্রাহ শাহীদি (অধিনায়ক), নাজিবুল্লাহ জাদরান, গুলবাদিন নাইব, মোহাম্মাদ নবি, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, ইয়ামিন আহমাদজাই, ফজলহক ফারুকী।
এটিভি বাংলা/ফয়সাল
Leave a Reply