ডেস্ক রিপোর্ট :
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিনদ্বীপে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে সতর্কবার্তায় ৮ নম্বর সংকেত পতাকা উঠানো হয়েছে। এলাকার অলিগলিতে চলছে মাইকিং। আতঙ্কে রয়েছেন দ্বীপের বাসিন্দারা। দ্বীপের সাইক্লোন শেল্টারসহ স্কুলসহ ৩৭টি হোটেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মধ্য-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। শুক্রবার মধ্যরাতে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ ১৫ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়েছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং এসব অঞ্চলের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের পাশাপাশি এই দুই জেলার কাছাকাছি যেসব দ্বীপ ও চর রয়েছে, সেসব দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে আট থেকে ১২ ফুটের বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। তবে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে মোখা। ফলে আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দারা। শঙ্কিত টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্বীপের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুটি সাইক্লোন শেল্টারসহ আরও ২০ থেকে ২২টি স্কুল এবং বিভিন্ন দ্বিতল ভবন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত নৌবাহিনীও। সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া সব ফিশিং ট্রলার ও স্পিড বোটগুলো নিরাপদ স্থানে নোঙর করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আয়াত উল্লাহ বলেন, সেন্টমার্টিনে সাগরের পানি পরিবর্তন, হালকা বৃষ্টি ও মাঝারি গতির দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত দ্বীপে বিদ্যুৎ নেই। যেকোনো সময় মোবাইল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সবাই খুব শঙ্কার মধ্যে রয়েছে।
ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম বলেন, শুক্রবার রাত ১২টার পর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও ধীরে ধীরে বাতাস বইতে শুরু করেছে। এর পাশাপাশি সাগর উত্তাল হয়ে উঠছে। দ্বীপে কাজ করতে আসা এবং অবস্থান করা বাইরের শ্রমিকরা ইতিমধ্যেই এলাকা ছেড়েছে। তবে অতীতের মতোই স্থানীয়দের মনোবল ঠিক আছে। দ্বীপবাসীর প্রতি আল্লাহর রহমত আছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পরিষদের সব সদস্যদের নিয়ে জরুরি সভা এবং নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। হোটেল-মোটেলসহ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ করে দ্বীপের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে আগে থেকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply