ডেস্ক রিপোর্ট :
ইন্ডিগো ফ্লাইটে মাঝ আকাশে এক সহযাত্রীর থাপ্পড় খেয়ে নিখোঁজ হয়ে গেছেন বলে দাবি করেছে ভারতের আসামের এক ব্যক্তির পরিবার। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তারা তাকে শনাক্ত করেন।
ওই নিখোঁজ ব্যক্তির নাম হুসেন আহমেদ মজুমদার (৩২), তিনি আসামের কাছাড় জেলার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) তিনি ইন্ডিগো ফ্লাইট-২৩৮৭-এ মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে শিলচর যাচ্ছিলেন। যাত্রা পথে তিনি হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এই আতঙ্কিত হওয়ার মুহূর্তে তীব্র ভয়ের কারণে তার শারীরিক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, হুসেনকে বিমান থেকে নামতে সাহায্য করার সময় দুই কেবিন সদস্য ও এক যাত্রী তাকে থাপ্পড় মারেন, আরও একজন যাত্রী তাকে শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন। অপর একজন যাত্রী এই সহিংসতার প্রতিবাদ করেন।
এই হামলায় জড়িত হাফিজুল রহমান নামে ওই ব্যক্তিকে কলকাতায় বিমান অবতরণের পর আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, হুসেন শিলচরে পৌঁছাতে না পারায় তার পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় তারা সাংবাদিকদের জানান, হুসেন এখনো পৌঁছাননি, ফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগও করেননি, তার ফোন বন্ধ রয়েছে।
পরিবার জানিয়েছে, মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে কর্মরত হুসেন অতীতেও একাধিকবার একই রুটে বাড়ি ফিরেছিলেন।
প্রাথমিকভাবে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে পরিবারের কিছু সদস্য তাকে আনতে শিলচর বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। সে সময় তারা হামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। কিন্তু হুসেন বিমানবন্দরে আসেননি। পরে, ভাইরাল হওয়া হামলার ভিডিও দেখে তারা তাকে শনাক্ত করেন ও তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, জানান হুসেনের বাবা আব্দুল মান্নান মজুমদার।
পরিবারের অভিযোগ, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কেউই হুসেনের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। তারা বিমানবন্দরে কর্তব্যরত কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ) কর্মকর্তাদেরও বিষয়টি জানিয়েছেন। স্থানীয় উধারবন্দ থানায় একটি নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার পর দিন সকালে হুসেন আহমেদের কলকাতা থেকে শিলচরগামী ফ্লাইটে ওঠার কথা ছিল, কিন্তু তিনি সেখানে যেতে পারেননি। শনিবার তিনি অন্য কোনো ফ্লাইটেও যাননি।
ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স হামলার ঘটনার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরে সিআইএসএফ কর্তৃক ওই যাত্রীকে আটক করা হয়েছে ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিগো একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়েছে, ‘আমাদের একটি ফ্লাইটে শারীরিক ঝগড়ার ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত। আমাদের ক্রুরা নির্ধারিত নিয়ম মেনেই কাজ করেছে। জড়িত ব্যক্তিকে অশান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, বিমান অবতরণের পর নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথভাবে জানানো হয়েছে।’
তবে ইন্ডিগোর বিবৃতিতে চড় মারা ব্যক্তি বা নিখোঁজ হুসেন আহমেদ সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply