ব্রাজিলের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি ট্রাম্পের

ডেস্ক রিপোর্ট :
ব্রাজিলে তৈরি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে ব্রাজিলের সাবেক কট্টর-ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিচার অবিলম্বে বন্ধ করার দাবিও তুলেছেন তিনি। খবর বিবিসির।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক “শুল্ক চিঠিতে” ট্রাম্প এই হুমকি দেন। তিনি মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর “আক্রমণ” এবং বলসোনারোর বিরুদ্ধে “উইচ হান্ট” পরিচালনার জন্য ব্রাজিলকে অভিযুক্ত করেন, যা তিনি রাজনৈতিক প্রতিশোধমূলক বলে দাবি করেন।

এদিকে, ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এই হুমকির জবাবে বলেন, যদি ট্রাম্প ব্রাজিলিয়ান পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ান, তবে তার জবাবে পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হবে। তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেন, ব্রাজিলের বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।

এর আগে লুলা বলেছিলেন, “কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা বিদেশি হস্তক্ষেপ মেনে নেব না।”

ট্রাম্প বলেন, ব্রাজিল থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয়। এই হার বর্তমান ঘোষিত ১০ শতাংশ শুল্কের তুলনায় অনেক বেশি।

শুধু ব্রাজিল নয়, ট্রাম্প একইসঙ্গে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও শ্রীলঙ্কাসহ ২২টি দেশকে শুল্ক আরোপের চিঠি পাঠিয়েছেন। এসব চিঠিতে ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে ট্রাম্প বলসোনারোর প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “আমি তাকে অনেক সম্মান করি।” তিনি বলসোনারোর চলমান বিচারকে “আন্তর্জাতিক লজ্জা” হিসেবে উল্লেখ করেন।

ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর)-কে নির্দেশ দেবেন ব্রাজিলের ডিজিটাল বাণিজ্য অনুশীলন নিয়ে একটি “৩০১ তদন্ত” শুরু করতে। এই ধারা অতীতে চীন বা অন্য দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপে আইনি ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

চিঠিতে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ব্রাজিল সরকার “মার্কিন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে সেন্সরশিপ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত” হেনেছে।

তার নিজের প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প মিডিয়াসহ একাধিক মার্কিন টেক কোম্পানি ব্রাজিলের আদালতের আদেশ নিয়ে আইনি লড়াই করছে। এই আদেশে ২০২২ সালের নির্বাচনের ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে কিছু অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এমনকি, ব্রাজিল সরকার কিছু সময়ের জন্য এক্স (সাবেক টুইটার) নিষিদ্ধও করেছিল।

গত মাসে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলে, সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত কনটেন্টের জন্য তাদের দায়ী করা যেতে পারে।

ট্রাম্প রিও ডি জেনেরিয়োতে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনকেও আক্রমণ করেছেন, যেখানে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা অংশ নেয়। তিনি একে “অ্যান্টি-আমেরিকান” বলেও অভিহিত করেন এবং বলেন, এই দেশগুলোর ওপর আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে লুলার জয় মেনে না নিয়ে বলসোনারোর সমর্থকরা ব্রাজিলের কংগ্রেস, প্রেসিডেন্সি এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালায়। তখন বলসোনারো যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন এবং তিনি এই হামলার সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন।

ট্রাম্প এর সঙ্গে নিজের অবস্থার তুলনা করে বলেন, “এটা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার অপচেষ্টা – আমি জানি, কারণ আমিও এর শিকার।”

এটিভি বাংলা/হৃদয়


Posted

in

,

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *