৭৮ বছরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যত যুদ্ধ

ডেস্ক রিপোর্ট :
ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানের পর ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। এরপর থেকেই এ দুটি দেশ বেশ কয়েকটি বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কাশ্মীর উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ। সম্প্রতি, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও চরম আকার ধারণ করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে, এতে পাকিস্তানও পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাতের ইতিহাস এবং সাম্প্রতিক উত্তেজনায় তা আবার নতুন মাত্রা পেয়েছে। খবর বিবিসির।

১৯৪৭

দেশভাগের কয়েক মাসের মধ্যেই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। উভয় দেশই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে। ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে এই সংঘাতের সমাপ্তি ঘটে। ওই সময় কাশ্মীরকে একটি নিয়ন্ত্রণ রেখা দ্বারা বিভক্ত করে দেওয়া হয়। তবে কোনো দেশই এই অঞ্চলের ওপর তাদের পূর্ণ দাবি থেকে সরে আসেনি।

১৯৬৫

পাকিস্তানি বাহিনীর ভারত-শাসিত কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে ১৯৬৫ সালে উভয় দেশ দ্বিতীয়বারের মতো পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। এই সংঘাতে স্থল ও আকাশপথে তীব্র লড়াই চলে। যদিও এই যুদ্ধও কোনো মীমাংসা ছাড়াই শেষ হয়।

১৯৭১

১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এই যুদ্ধটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আরেকটি বড় সংঘাতের জন্ম দেয়।

১৯৯৯

পাকিস্তানি সৈন্য ও জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারত-শাসিত কাশ্মীরের কারগিল জেলার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল করে নেয়। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুটি দেশের মধ্যে এটিই ছিল প্রথম সরাসরি সামরিক সংঘাত, যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করে।

২০১৬

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, জঙ্গি হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। ২০১৬ সালে উরি সেনা ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালায়।

২০১৯

পুলওয়ামায় ভয়াবহ বোমা হামলার প্রতিক্রিয়ায় ২০১৯ সালে ভারত বালাকোটের কাছে বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে পাকিস্তানও তাদের বিমান বাহিনী ব্যবহার করে পাল্টা আক্রমণ করে, যা ছিল ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধের পর দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক সামরিক উত্তেজনাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটির এই ধারাবাহিক সংঘাত ও পাল্টাপাল্টি হামলা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থির করে তুলেছে এবং সর্বশেষ ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মাধ্যমে তা নতুন ও বিপজ্জনক মাত্রা লাভ করেছে।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *