গাজায় নিহত আরও ৩৪

ডেস্ক রিপোর্ট :
ইসরায়েলি বাহিনীর  হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় আরও ৩৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কেউ তাঁবুর ভেতরে জীবন্ত পুড়ে মারা গেছেন, আবার কেউ প্রাণ হারিয়েছেন উত্তর গাজার একটি স্কুলের আশ্রয়কেন্দ্রে, যেখানে বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো ঠাঁই নিয়েছিল। হামলায় বেশ কয়েকটি পরিবার সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

দেইর আল-বালাহ থেকে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদক মোআথ আল-কালহুত জানান, সারা দিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চল ও গাজা শহরের পূর্বাংশে ঘরবাড়ি ধ্বংসের অভিযান চালিয়েছে। শুজাইয়া পাড়ায় অসংখ্য আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আটকে পড়া বাসিন্দাদের কাছে প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ পৌঁছানো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা তাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

এদিকে, দেড় মাস ধরে ত্রাণবাহী গাড়ি প্রবেশে ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার ফলে উপত্যকায় খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য, পানি ও ওষুধের প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনাহারে ও অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা, বিশেষ করে শিশুরা ভয়াবহ অপুষ্টির শিকার হচ্ছে। বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো তাদের অসহনীয় কষ্টের কথা জানিয়েছেন। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের খাওয়াতে পারছেন না।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, ইসরায়েলের এই অবরোধ আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বেসামরিক নাগরিকদের জীবন বিপন্ন করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ স্পষ্ট জানিয়েছেন, হামাসের ওপর চাপ বজায় রাখতে এই অবরোধ চলবে এবং তা সরানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ না পৌঁছানোয় গাজায় মানবিক বিপর্যয় ক্রমশ বাড়ছে। পুষ্টিকর খাবারের অভাবে শিশুরা দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত মার্চ মাসেই অপুষ্টিতে ভোগা প্রায় ৩ হাজার ৭০০ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যা আগের মাসের তুলনায় অনেক বেশি। বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটও দেখা দিয়েছে উপত্যকায়।

এই পরিস্থিতিতে, গাজা দখলের বিষয়ে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জার্মানি। উত্তর কোরিয়াও ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসরায়েল। এরপর থেকে উপত্যকার পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *