ইয়েমেনের বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত বেড়ে ৭৪

ডেস্ক রিপোর্ট :
ইয়েমেনের রাস ঈসা তেল বন্দরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ জনে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৭০ জনেরও বেশি মানুষ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা এএফপি ও আল-জাজিরার পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে চালানো এ হামলা মার্কিন বাহিনীর চালানো ধ্বংসাত্মক হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

হোদেইদাহ স্বাস্থ্য অফিসের বরাত দিয়ে দেশটির আল মাসিরাহ টেলিভিশন চ্যানেল এ খবর প্রকাশ করে।

হুথি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আলাসবাহি বলেছেন, ‘রাস ঈসা স্থাপনা লক্ষ্য করে মার্কিন হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় ১৭১ জন আহত হয়েছেন।’

আজ শুক্রবার ভোরের দিকে আল মাসিরাহ টিভির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে রাস ঈসা বন্দরের রাতের আকাশ বিশাল বিস্ফোরণে আলোকিত হতে দেখা যায়। এরপর ভিডিওতে ধ্বংসস্তূপ ও আগুনের ক্লোজ-আপ দৃশ্য দেখানো হয় এবং সর্বশেষে একজন মৃত বেসামরিক ব্যক্তির গ্রাফিক চিত্র দেখানো হয়।

ওই পোস্টের ক্যাপশনে আরবিতে লেখা হয়েছে, ‘রাস ঈসা তেল বন্দরকে লক্ষ্য করে মার্কিন আগ্রাসনের অপরাধের প্রাথমিক ফুটেজ, যার ফলে বহু লোক শহীদ হয়েছেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন বন্দর কর্মী ও অন্যান্য কর্মচারী আহত হয়েছেন।’

আল মাসিরাহ তাদের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে ধ্বংসের একই রকম দৃশ্য এবং গুরুতরভাবে দগ্ধ বন্দর কর্মীদের সাক্ষাৎকার সম্বলিত কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করেছে।

মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক পোস্টে বলেছে, ‘এই হামলার লক্ষ্য ছিল হুতিদের অর্থনৈতিক ক্ষমতার উৎসকে দুর্বল করা, যারা স্বদেশিদের ওপর শোষণ ও চরম দুর্ভোগ চাপিয়ে দিচ্ছে।’

তবে ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যের জন্য পেন্টাগনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির বৃহত্তম সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্চে দুই দিনের মার্কিন হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল বলে হুতি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তথ্য অনুযায়ী, রাস ঈসা একটি তেল পাইপলাইন ও বন্দরের কেন্দ্রস্থল, যা ইয়েমেনের ‘গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য অবকাঠামো’। ইয়েমেনের প্রায় ৭০ শতাংশ আমদানি ও ৮০ শতাংশ মানবিক সহায়তা রাস ঈসা, হোদেইদাহ ও আস-সালেফ বন্দরের মাধ্যমেই আসে।

আল মাসিরাহ টিভির এক সংবাদদাতা জানান, বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ইয়েমেনি রেড ক্রিসেন্টের সদস্যদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান ও আগুন নেভানোর জন্য ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।

হুতি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসের আল-আতেফি সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, ‘মার্কিন শত্রুদের হামলা’ ইয়েমেনের জনগণকে গাজার সমর্থনে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না, বরং তাদের দৃঢ়তা ও স্থিতিশীলতাকে আরও শক্তিশালী করবে।

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুতিরা লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোর ওপর ১০০টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। তারা বলছে, গাজার ওপর ইসরায়েলের যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় এই অভিযান চালানো হচ্ছে।

অন্যদিকে, ওয়াশিংটন হুতিদের হুঁশিয়ার করে বলেছে, লোহিত সাগরে নৌ চলাচলে হামলা বন্ধ না করা পর্যন্ত তাদের ওপর আক্রমণ অব্যাহত থাকবে।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *