ডেস্ক রিপোর্ট :
পহেলা বৈশাখ—শুধু একটি দিন নয়, এটি বাঙালির হৃদয়ের উৎসব। নতুন দিনের আলো, নতুন বছরের শুরু আর নতুন সম্ভাবনার হাতছানি নিয়েই আসে বাংলা নববর্ষ। বাংলার মানুষের কাছে এই দিনটি কেবল নতুন ক্যালেন্ডার পাল্টানোর দিন নয়—এটি এক অনুভব, এক আত্মিক উচ্ছ্বাস, যা আমাদের শিকড়ের সঙ্গে নতুন করে জড়িয়ে দেয়।
প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল (গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী) ঘটা করে পালিত হয় বাংলা নববর্ষ। লাল-সাদা পোশাক, পান্তা-ইলিশ, মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা—সব মিলিয়ে এই দিনটিকে বাঙালি জাতি উদযাপন করে প্রাণ খুলে।
তবে এখানেই প্রশ্ন ওঠে—বাংলা নববর্ষ আমাদের জীবনে এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? কেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এই একটি দিন আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে এত নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই চলুন ফিরে যাই পহেলা বৈশাখের ইতিহাস, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ইতিহাস আর সেই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার ইতিহাসে, যেখানে বাঙালির ঐতিহ্য আর আত্মপরিচয়ের গল্প লেখা আছে রঙে, আলোয় আর সুরে।
বাংলা নববর্ষ আমাদের জীবনে এত গুরুত্বপূর্ণ কেন?
বাংলা নববর্ষ কেবল একটি তারিখ নয়। এটি আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক, সংস্কৃতির দিগন্তে গর্বিত একটি পতাকা। এই দিনটি আমাদের জাতিসত্তা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির নিদর্শন। হালখাতা, মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা, লাল-সাদা পোশাক, আর মিষ্টিমুখ—সবকিছু মিলিয়ে এটি এমন এক উৎসব, যেখানে ধনী-গরিব, শহর-গ্রাম, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একসাথে উদযাপন করে।
এই দিনে আমরা পুরনো বছরের দুঃখ, গ্লানি আর হতাশা ঝেড়ে ফেলে নতুন করে বাঁচার প্রেরণা পাই। নতুন বছর মানেই নতুন সম্ভাবনা, নতুন স্বপ্ন। তাই পহেলা বৈশাখ আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।
এটি শুধু ব্যক্তিগত বা পারিবারিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়। ব্যবসা-বাণিজ্যেও এই দিনটির রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। ব্যবসায়ীরা নতুন খাতা খুলে হালখাতা করেন, দেনাদারদের আমন্ত্রণ জানান, মিষ্টিমুখ করান। সমাজিকভাবেও এটি এক মিলনমেলা—ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য আর সংস্কৃতির অপূর্ব সম্মিলন।
সত্যি বলতে, বাংলা নববর্ষ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—আমরা বাঙালি, আমাদের রয়েছে একটি নিজস্ব ইতিহাস, একটি গর্বিত পরিচয়।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply