চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে ক্ষুধা-দারিদ্র্যের কথা বলতে গিয়ে কাঁদলেন প্রধান উপদেষ্টা

ডেস্ক রিপোর্ট :
বিনিয়োগ সম্মেলনে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে ক্ষুধা-দারিদ্র্যের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

‘১৯৭১ সালে প্রাণ ত্যাগের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশের সূচনা হয়। এখন বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৮ কোটি, তখন ছিল এর তিন ভাগের একভাগ। এরপর আসে ১৯৭৪।’ এ কথা বলেই আবেগাপ্লুত হয়ে নীরব হয়ে যান প্রধান উপদেষ্টা। এক পর্যায়ে কেঁদেও ফেলেন তিনি। পরে চোখ ছলছল অবস্থায় আবারও বলতে শুরু করেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ক্ষুধায় মানুষ মারা গেছে। আমাদের দেশের অনেক বড় একটা দুর্ভিক্ষ ছিল। ১৫ লাখ মানুষ মারা গেছে। তখন এমন ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা (বছরে) একটিই ফসল ফলাতাম তখন। আমাদের অন্য কোনো উপায় জানা ছিল না। আমাদের দেশের মানুষ কৃষক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। কারণ তাদের আর কোনো পেশা ছিল না। আর তাদের মধ্যে তিন চতুর্থাংশের নিজের কোনো জমি ছিল না। জীবন অনেক কঠিন ছিল।’

১৯৭৪ সাল থেকে ২০২৫ সালের এই যাত্রা অনেক চমৎকার একটি সফর উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘বড়বড় শিল্প নিয়ে আমরা আলাপ করছি, বিদেশি অনেক কোম্পানি আরও শিল্প কারখানা এখানে গড়ে তুলতে চায়, বড়বড় বাজার নিয়ে কথা হয়, তরুণ জনগোষ্ঠী নিয়ে আলাপ হয়। খুব অল্প সময়ে অনেক পথ পেরিয়ে, এটি এখন বাংলাদেশ।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দুর্ভিক্ষের সেই সময় গরীব মানুষকে ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, যাতে তারা নিজেদের ব্যবসা শুরু করতে পারে। বিশেষ করে নারীদের দেওয়া হয়েছিল। সেটি ছিল ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি। আমরা গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করলাম। কোনো ধারণাই ছিল না কোন পথে যাবে। পরে তা বৈশ্বিক এক নামে পরিণত হলো।’

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, ‘আপনি যে দেশেই বসবাস করেন না কেন, আপনার ভেতর ছোট একটি ১৯৭৪ বসবাস করে। আপনারা দেখতে চান না, লুকিয়ে রাখেন মানুষকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে। আমি সবসময় বলে আসছি জনগণের অর্থ গরীব মানুষকে দেওয়ার মধ্যে কোনো সমাধান নেই। সমাধান আছে অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে, মানুষের শক্তিকে বের করে নিয়ে আসার মধ্যে।’

এটিভি বাংলা / হৃদয়


by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *