ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ওয়াশিংটনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর

ডেস্ক রিপোর্ট :

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ধনকুবের ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে একযোগে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে হাজার হাজার মানুষ। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার (৫ এপ্রিল) ওয়াশিংটন ডিসি’র জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের সামনে ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য শহরে প্রায় এক হাজার ২০০টি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে—যা ট্রাম্পবিরোধী সবচেয়ে বড় একক দিনের আন্দোলন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।

বিক্ষোভকারীরা মেঘলা আকাশ ও হালকা বৃষ্টির মধ্যেও ওয়াশিংটন মনুমেন্টের আশপাশে জমায়েত হন। আয়োজকরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, ন্যাশনাল মলে আয়োজিত সমাবেশে ২০ হাজারের বেশি লোক যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

আন্দোলনের ওয়েবসাইট অনুসারে, প্রায় ১৫০টি অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ছাড়াও কানাডা ও মেক্সিকোতেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রিন্সটনের অবসরপ্রাপ্ত বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী টেরি ক্লেইন জানান, “আমি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, ডিওজিই বিষয়ক অবস্থান, এই সপ্তাহের ট্যারিফ, শিক্ষা—সবকিছুর বিরুদ্ধেই এসেছি। আমাদের গোটা দেশ, সব প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে।”

 

সমাবেশস্থলে অনেকে ইউক্রেনের পতাকা এবং ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির হন। মঞ্চে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করেন।

ওয়েস্ট কেপ মে, নিউ জার্সির অবসরপ্রাপ্ত মানি ম্যানেজার ৭৩ বছর বয়সী ওয়েইন হফম্যান বলেন, “এই ট্যারিফগুলোর ফলে লাল রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি হবে, কর্মসংস্থান যাবে, ৪০১কে তহবিল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। লোকজন হাজার হাজার ডলার হারাচ্ছে।”

২০ বছর বয়সী ওহাইওর ইন্টার্ন কাইল ছিলেন বিক্ষোভস্থলে একমাত্র ট্রাম্পপন্থী। ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ টুপি পরে তিনি প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে যুক্তিতর্কে অংশ নেন। কাইল বলেন, “বেশিরভাগ মানুষ খুব একটা বিরূপ নয়, কেউ কেউ গালিও দেয়।”

 

বিক্ষোভ চলাকালীন ট্রাম্প ফ্লোরিডার জুপিটার ক্লাবে গলফ খেলায় ব্যস্ত ছিলেন এবং পরে মার-আ-লাগোতে ফিরে যান। তার এই নিস্পৃহ আচরণের প্রতিবাদে মার-আ-লাগো থেকে মাত্র ৬ কি.মি. দূরে ওয়েস্ট পাম বিচে ৪০০-এর বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।

এ সময় একটি পোস্টারে লেখা ছিল—“বাজার ধসে পড়ে, ট্রাম্প গলফ খেলে।”

কানেকটিকাটের স্ট্যামফোর্ডে ৮৪ বছর বয়সী সু-অ্যান ফ্রিডম্যান একটি উজ্জ্বল গোলাপি লেখা পোস্টার নিয়ে হাজির হন। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আমার মিছিল করা শেষ, কিন্তু মাস্ক আর ট্রাম্পের মতো লোকেরা আবার আমাকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করছে।”

৭৪ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত আইনজীবী পল ক্রেটসম্যান প্রথমবারের মতো কোনো বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি বলেন, “আমার ভয় হচ্ছে সোশ্যাল সিকিউরিটি ধ্বংস করে ফেলা হবে, আমাদের সেবাগুলো কে দেবে? এটা সরকারের কাঠামো ভেঙে ফেলার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হচ্ছে, যেন ট্রাম্প ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে।”

 

এটিভি বাংলা / হৃদয়

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *