আজও ঢাকা ছাড়ছে মানুষ, স্বস্তি বাস টার্মিনালে

ডেস্ক রিপোর্ট :
এবার ঈদে লম্বা ছুটি পাওয়ায় তিন দিন আগে থেকেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করেন মানুষ। অধিকাংশ মানুষ গত তিন দিনে ঢাকা ছেড়ে যাওয়ায় আজ শনিবার (২৯ মার্চ) বাস টার্মিনালে নেই ভিড়, নেই যাত্রী নিয়ে টানাটানি। বরং, যাত্রীর অপেক্ষায় বাস চালকরা! স্বস্তিতে গ্রামে ফিরতে পারছে মানুষ।

রাজধানীর সাইনবোর্ড, যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ, মানিকনগর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা–চট্টগ্রাম, ঢাকা–নোয়াখালী, ঢাকা-ফেনী রুটে বাস কাউন্টারে নেই চিরাচরিত কোনো ভিড়। এ বিষয়ে ঢাকা–নোয়াখালী রুটের কে, কে ট্রাভেলসের বাসের সুপারভাইজার বাবুল মিয়া এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভিড় ছিল অনেক বেশি। যাত্রী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে। কিন্তু আজ (শনিবার) যাত্রী অনেক কম, টিকিট শেষ করতে সময় লাগছে।’

ফেনী যাওয়ার গাড়ি স্টার লাইনের যাত্রী মামুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার-শুক্রবার অনেক ভিড় থাকায় আজকে বাড়ি যাচ্ছি। অনেকটা স্বস্তিতে বাড়ি যেতে পেরে ভালো লাগছে।’

সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের বিভিন্ন কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি ফিরতে ভিড় করছেন যাত্রীরা। তবে কয়েকটি রুটে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

সাধারণত নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও ফেনী রুটের আসনপ্রতি ভাড়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা থাকলেও ঈদকে কেন্দ্র করে সেটি বেড়ে হয়েছে ৬০০ টাকা।

কিছুটা ব্যতিক্রম চিত্র দেখা গেছে বরিশালের বাস কাউন্টারে। পটুয়াখালীর এক যাত্রী টিকিট সংগ্রহ করতে চাইলে বাস কাউন্টার মাস্টার বলেন, ‘এসি টিকিট একদাম ১ হাজার ১০০ টাকা ও নন-এসি বাসের একদাম ৯০০ টাকা।’

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের বন্ধ থাকায় শুধু বৃহস্পতিবার অফিস-আদালত খোলা ছিল। অনেকে বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়ে লম্বা ছুটি কাটানোর সুযোগ পান। কেউবা বৃহস্পতিবার অফিস শেষে ছুটে চলেন গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে। তবে শুক্রবার ছিল রাজধানী ছাড়ার মূল স্রোত; বাস, ট্রেন, লঞ্চ কোথাও তিল পরিমাণ ঠাঁই ছিল না।

ঝামেলা এড়াতে কেউ কেউ পরিবার নিয়ে রাজধানী ছেড়ে যাচ্ছেন আজ শনিবার। অনেক ব্যবসায়ী ঈদের কেনাবেচা গুটিয়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন আজ।

এ বছরের রোজার ঈদ বছরের প্রথম দিকে হওয়ায় রাজধানীতে বসবাসকারী ছাত্র-ছাত্রীদের নেই পরীক্ষা ও পড়াশোনার চাপ। বই পেতে দেরি হওয়ায় অনেক স্থানে ঠিকমতো ক্লাসও হয়নি। এই সুযোগে অনেক অভিভাবক তাদের পরিবার আগেই দেশের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।

বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ মার্চ থেকে ১৬১টি কারখানায় ছুটি শুরু হয়েছে। গত ২৭ মার্চ থেকে ৩৭৪টি, ২৮ মার্চ ৬৪৮টি কারখানায় ছুটি দেওয়া হয়। আজ (২৯ মার্চ) থেকে ৯২৪টি কারখানায় ছুটি দেওয়া হবে। চাঁদ দেখার ভিত্তিতে এ বছর ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে পারে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩১ মার্চ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হতে পাড়ে। ৩১ মার্চ ঈদুল ফিতর ধরে ছুটি নির্ধারণ করে রেখেছে সরকার। ঈদ উপলক্ষে এবারই সরকার প্রথম পাঁচ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ছুটি মূলত শুরু হয়েছে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিন। এরপর ২৭ মার্চ একদিন অফিস খোলা। ২৮ মার্চ শবে কদরের ছুটি। আজ শনিবার (২৯ মার্চ) থেকে শুরু হয়েছে ঈদুল ফিতরের ছুটি। টানা পাঁচ দিনের ছুটি শেষ হবে ২ এপ্রিল। তবে ৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সরকার নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করেছে। আর ৪ ও ৫ এপ্রিল (শুক্র ও শনিবার) দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটি। সেই হিসাবে এবার ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১১ দিনের টানা ছুটি উপভোগ করতে পারছেন দেশের মানুষ।

এটিভি বাংলা /  হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *