ডেস্ক রিপোর্ট :
যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেস নতুন বাজেট অনুমোদনের পর অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার ও বহিষ্কারের অভিযান আরও তীব্র হয়েছে। এতে নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডাসহ বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসরত লক্ষাধিক বাংলাদেশি চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেও বৈধতা না পাওয়ায় তাদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের নির্দেশ রয়েছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতারের শঙ্কায় তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এদের মধ্যে রয়েছেন বহু শিক্ষার্থী, যারা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পরও থেকে গেছেন। কেউ কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় বা বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্বের চেষ্টা করলেও বেশিরভাগই ব্যর্থ হয়েছেন। দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে থাকা অনেকেই এখন কর্মস্থলে যেতে ভয় পাচ্ছেন। অনেকে বাসা বদলেছেন কিংবা কাজ ছেড়ে দিয়েছেন।
নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, ফিলাডেলফিয়া ও বোস্টনের মতো স্যাঙ্কচুয়ারি সিটিগুলোতে আগে আইস (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) অভিযান চালাতে পারত না, তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির ফলে এখন সেসব স্থানে অভিযান চলছে। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলোকে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে বাধ্য করা হয়েছে, যার ফলে আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
বাংলাদেশিসহ অনেক অভিবাসী আগে রেস্টুরেন্ট, মুদি দোকান, নির্মাণ শ্রমিক ও ডেলিভারিম্যানের কাজ করলেও এখন নিরাপত্তাহীনতার কারণে কাজে যেতে পারছেন না। বিভিন্ন ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট ও গ্রোসারি দোকানে কর্মচারীর সংখ্যা কমে গেছে। ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন, কারণ আতঙ্কের কারণে অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
নির্দিষ্ট সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতারের লক্ষ্য থাকলেও বাস্তবে অভিযানের সময় অনেক নিরপরাধ মানুষকেও আটক করা হচ্ছে। গ্রিন কার্ডধারী হয়েও সঙ্গে পরিচয়পত্র না থাকার কারণে অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন।
গ্রেফতার অভিযানে অসন্তোষ প্রকাশ করে কংগ্রেস নতুন করে ৮৫ বিলিয়ন ডলারের একটি বাজেট অনুমোদন করেছে, যার বেশিরভাগই এই ধরপাকড় আরও বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হবে। তবে গ্রেফতারকৃতদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন, যা নিয়ে সরকার এখনো সংকটে আছে।
এ অবস্থায় বহু বাংলাদেশি স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন, যদিও সঠিক সংখ্যাটি জানা সম্ভব হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অভিবাসন নীতি অনেক কঠোর হয়ে গেছে, যা দীর্ঘদিন ধরে থাকা প্রবাসীদের জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply