জাতিসংঘ থেকে কি যুক্তরাষ্ট্র সরে যাচ্ছে? ৩৬টি প্রশ্নে ইঙ্গিত!

ডেস্ক রিপোর্ট :
জাতিসংঘের বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থাকে ৩৬টি প্রশ্ন পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে তাদের মার্কিনবিরোধী কোনো বিশ্বাস বা সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট (ওএমবি) থেকে পাঠানো এই প্রশ্নপত্রের একটি কপি তাদের হাতে এসেছে।

মার্কিন নীতির প্রতিফলন ঘটানো প্রশ্ন

ওএমবি কর্তৃক পাঠানো ৩৬টি প্রশ্নের মধ্যে এমন কিছু রয়েছে, যা সরাসরি মার্কিন প্রশাসনের নীতির প্রতিফলন ঘটায়। যেমন :

জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থাগুলো কি নিশ্চিত করতে পারবে যে, তারা কোনো কমিউনিস্ট, সমাজতান্ত্রিক বা একনায়কতান্ত্রিক দলের সঙ্গে কাজ করছে না?

তারা কি চীন, রাশিয়া, কিউবা বা ইরানের কাছ থেকে কোনো তহবিল গ্রহণ করে না?
তাদের এমন কোনো প্রকল্প রয়েছে কি না, যেখানে ‘বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (ডিইআই)’ বা ‘জলবায়ু পরিবর্তন’-সংক্রান্ত কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে?

এই প্রশ্নপত্র জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR) ও রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটিসহ বেশ কিছু মানবিক সাহায্য সংস্থা পেয়েছে বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য কমানোর পরিকল্পনা?

গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের পরামর্শে সরকারি ব্যয় কমানোর অভিযানে নামে। এর অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে তাদের বৈদেশিক সাহায্যের প্রায় ৮৩ শতাংশ বরাদ্দ বন্ধ করেছে।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা আশঙ্কা করছে, ওএমবির এই পদক্ষেপ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে মানবিক সংকট ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার পর এবার জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ওপর নতুন চাপ সৃষ্টি করতে যাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলো এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সংস্থাটির এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, “বেশির ভাগ প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ/না ছিল এবং ব্যাখ্যার সুযোগ ছিল সীমিত। ফলে আমরা সরাসরি ফরমটি পূরণ না করে ই-মেইলের মাধ্যমে উত্তর দিয়েছি।”

‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির প্রতিফলন

জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান স্টাডিজ সেন্টারের অধ্যাপক কার্ল ব্ল্যাঞ্চেট মনে করেন, এটি মূলত বহুপক্ষীয় সহযোগিতার বিপরীতে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির প্রতিফলন।

যুক্তরাষ্ট্র কি জাতিসংঘ থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যাচ্ছে?

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ৩৬টি প্রশ্নে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওএমবি ও জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন মিশনের কাছে বিবিসি এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করেছিল। তবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *