1. [email protected] : @nexttech :
  2. [email protected] : SM Solaiman : SM Solaiman
শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন

মাগুরার শিশুটি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল নীরব অভিমানে।

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫
  • ৩ Time View

ডেস্ক রিপোর্ট :

বারবার হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে যেতে চাইছে। বন্ধ হওয়া হৃদয়টাকে প্রচণ্ড শক্তিকে ধাক্কা দিয়ে আবারও চালু হতে বলছে গোটা দেশ। পারছে না শিশুটি। আট বছরের ছোট্ট শরীরে বেঁচে থাকার কোনো শক্তি আর অবশিষ্ট নেই যে!

কেন বেঁচে থাকবে? কেউ কি তাকে বাঁচাত, যদি আবারও সে কেঁদে বলত, ‘মা, আমি ঘরে ফিরে যেতে চাই!’ নাকি আরও লাখো শিশুর মতো তাকেও আবার বলা হতো, ‘সব ভুলে যা মা, এসব কথা কাউকে বলতে নেই!’

শিশুটি আর কোনো অভিযোগ করবে না। ছোট্ট সাদা কাফনে মোড়ানো শিশুটিকে আজকে যখন তার মা শেষবারের মতো ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন, তখন হয়তো তাঁর বারবার একটি কথাই মনে পড়বে, ‘ইশ! ক্যান যে পাঠাইছিলাম!’ কিন্তু সময় কেবল সামনেই বয়ে চলে।

আজকে দেশজুড়ে অনেক নিন্দা, অনেক প্রতিবাদ। খুব ভালো। কিন্তু শুধু দোষীদের ফাঁসি চাইলেই কি শিশুরা নিরাপদ হবে? কে অপরাধী? শুধু কি তারাই যারা ধর্ষণ করে, নাকি পুরো সমাজ, যারা এখনো মনে করে কোনো নারীর ওপর কোনো পুরুষ বিকৃত যৌনাচার চালালে নারীর শ্লীলতা বা সম্ভ্রমহানি হয়?

মাগুরার শিশুটি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল নীরব অভিমানে। হয়তো তার শেষ প্রশ্ন ছিল, মা কেন তার কথা শুনলেন না? কেন তার নিরাপত্তার কথা ভাবলেন না? সে দোষ কি একা তার মায়ের, নাকি আমরা সবাই মিলে আমাদের মায়েদের শিখিয়েছি, ঘরের কিংবা বাইরের পুরুষ আমার সন্তানের গায়ে হাত দিলে, সে দোষ আমার সন্তানের। এতে নারী অপবিত্র হয়, বিকৃত পুরুষ নয়। তাই নারীর এ ‘লজ্জা’ লুকিয়ে ফেলাই শ্রেয়। এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হলে আরও অনেক শিশুর অশ্রু দেখার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

পরিবারকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে, মায়েদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের সন্তানদের সঙ্গে যৌনতা নিয়ে কথা বলতে হবে। তারা যদি না–ই জানে, বিকৃত যৌনাচার কী, কীভাবে তারা এর শিকার হতে পারে, তাহলে তারা নিজেদের রক্ষা করবে কীভাবে?

সবচেয়ে জরুরি পরিবারের মধ্যে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে একটি শিশু নির্দ্বিধায় তার আপনজনকে নিজের সমস্যার কথা বলতে পারবে। তার মধ্যে এই ধারণা গড়ে দিতে হবে, বিকৃত যৌনাচারের দায় তার নয়; বরং দায় সেই অমানুষটির, যে শিশু কিংবা নারীর শরীরে আপত্তিকরভাবে হাত দেয়।

 

আমাদের সন্তানেরা তাদের সবচেয়ে কাছের মানুষগুলোর কাছে এই বিকৃতির শিকার হয়। এরা কেউ মামা, কেউ চাচা, কেউ বড় ভাই, কেউ গৃহশিক্ষক। কিন্তু তাদের একমাত্র পরিচয় হওয়া উচিত তারা বিকৃত রুচির মানুষ। এদের বিরুদ্ধে কথা বলার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। চুপ করে থাকাটা কোনো সমাধান নয়।

যখন পরিবারের কেউ এ ধরনের আচরণ করে, পরিবারের সম্মানহানি করে সেই মানুষটিই। যে এই আচরণের শিকার, সে নয়। এই সহজ কথাটা আমাদের বাবা–মায়েদের বুঝতে হবে। বোঝাতে হবে আমাদের সন্তানদের। পোশাক বা বয়স নির্বিশেষে নারী ও শিশুরা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। বিকৃতির হাত বাইরের চেয়ে ঘরের ভেতরে অনেক বেশি প্রকট। তাই প্রতিরোধ শুরু হতে হবে ঘরের ভেতর থেকে।

ধর্ষণের ও নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে সাজার হার এ দেশে বরাবরই লজ্জাজনক। এখানে একদিকে বিচার চাইতে এসে নারীরা যেমন নানা রকম হয়রানির শিকার হন, তেমনি আছে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রবণতা। আইন পরিবর্তন করে ২০২০ সালেই ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু তাতেই কি ধর্ষণের সংখ্যা কমেছে?

 

 

এটিভি বাংলা / হৃদয়

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© 2022-2025
কারিগরি সহায়তা: Next Tech