ডেস্ক রিপোর্ট :
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে জিম্মি যাত্রীদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। ইতিমধ্যে অন্তত ৮০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর অন্তত ১৩ সদস্য নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের বোলান এলাকার কাছে কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী ট্রেনে হামলা চালায় সশস্ত্র একটি গোষ্ঠী। তারা এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে যাত্রীদের জিম্মি করে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংবাদমাধ্যম রেডিও পাকিস্তান এবং পিটিভি নিউজ এর আগে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, বোলান পাসের ধাদার এলাকায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা জাফর এক্সপ্রেসে হামলা চালিয়ে নারী-শিশুসহ যাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছেন। ওই সময় তাঁদের সঙ্গে ‘বিদেশি সহায়তাকারীদের’ যোগাযোগ ছিল। সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেলেছে এবং সব যাত্রীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান শুরু করেছে।
আজ ভোরে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী ৮০ জন জিম্মিকে উদ্ধার করেছে। ‘নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৪৩ জন পুরুষ, ২৬ জন নারী এবং ১১ জন শিশু। নিরাপত্তা বাহিনী বাকি যাত্রীদের নিরাপদে উদ্ধারে কাজ করছে।
এ ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ১৩ সদস্য নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকে। রেডিও পাকিস্তানের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রমতে, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের কারণে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। আহত যাত্রীদের নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্যরা অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
হামলার দায়
নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
জিও নিউজের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী বলেন, দুপুরের দিকে দুর্গম এলাকায় ট্রেনটিকে জিম্মি করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে শুরু করলে কিছু যাত্রীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে কতজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তা তিনি প্রকাশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।
তালাল চৌধুরী আরও বলেন, মুক্ত যাত্রীদের নিকটতম স্টেশনে এবং সবশেষে তাঁদের নির্ধারিত গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অনেক লোককে ট্রেন থেকে পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রাণহানির কারণে নিরাপত্তা বাহিনী সাবধানতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে। অভিযান এখনো চলছে।
জরুরি অবস্থা
বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শহীদ রিন্দ আগে এক বিবৃতিতে বলেছেন, পেহরো কুনরি ও গাদালারের মাঝামাঝি কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনে তীব্র গুলি চালানোর খবর পাওয়া গেছে।
রেলওয়ে নিয়ন্ত্রক মুহাম্মদ কাশিফ বলেছেন, ৯টি কোচবিশিষ্ট ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ যাত্রী রয়েছেন। ৮ নম্বর টানেলের মধ্যে সশস্ত্র ব্যক্তিরা ট্রেনটি থামিয়েছেন।
রয়টার্সের তথ্যমতে, নিরাপত্তা বাহিনী বলেছে, টানেলের কাছে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তারা পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে গোলাগুলি করছেন।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply