ডেস্ক রিপোর্ট :
আবারও ব্যর্থতার গল্প লিখল বাংলাদেশ। শুধু এবারই নয়, আইসিসি ইভেন্টে ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ দলের প্রাপ্তি শুধুই হতাশা। ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্ব থেকে হতাশাজনকভাবে বিদায় নিয়েছে টাইগাররা। ব্যর্থতার এই সফরে একমাত্র প্রাপ্তি বলতে বৃষ্টির কারণে ভাগাভাগি করে পাওয়া ১ পয়েন্ট।
দুবাইয়ে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ৬ উইকেটের পরাজয় দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশ দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি মিশন। এরপর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও শোচনীয় হার (৫ উইকেটে)। এ হারের ফলে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় শান্ত-মিরাজদের।
নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়াইয়ের সুযোগ থাকলেও প্রকৃতি যেন সেই সুযোগও দেয়নি। বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয় ম্যাচটি, ফলে ১ পয়েন্ট পায় বাংলাদেশ।
ডট বলের মিছিলে ব্যর্থ ব্যাটিং ইউনিট
বাংলাদেশ শুধু ম্যাচ হারেনি, ব্যর্থতার নজিরও গড়েছে ব্যাটিংয়ে। দুই ম্যাচে আগে ব্যাটিং করেও ২৫০ রান ছুঁতে পারেনি টাইগাররা। প্রথম ম্যাচে ৪৯.৪ ওভারে ২২৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। মোট ২৯৮ বলের মধ্যে তারা ডট বল খেলেছে ১৫৯টি!
পরের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেটি আরও ভয়ংকর আকার নেয়। মাত্র ৩০ ওভারে ২৩৬ রানে অলআউট হয় দল, যেখানে ৩০০ বলের মধ্যে ১৮১ বলই ছিল ডট! সব মিলিয়ে দুই ম্যাচে ৫৯৮ বল খেললেও, ৩৪০ বলই ছিল ডট! অর্থাৎ, বাংলাদেশ কার্যত পুরো এক ম্যাচের বেশি সময় কোনো রানই নিতে পারেনি!
টপ অর্ডারের ধ্বংসস্তূপ, দলের সেরা ব্যাটার জাকের অনিক
দলের ব্যর্থতার মাঝেও একটু স্বস্তির নাম ছিল জাকের আলি অনিক। তিনি ২ ম্যাচে ১টি হাফ-সেঞ্চুরিসহ করেন ১১৩ রান। ভারতের বিপক্ষে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
তাওহিদ হৃদয় ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তিনি ১০০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেললেও, সেটি দলকে জেতাতে পারেনি। অধিনায়ক শান্ত দুই ম্যাচে মোট ৭৭ রান করেন।
অন্যদিকে, ভাইস ক্যাপ্টেন মেহেদী হাসান মিরাজ ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। ব্যাট হাতে উপরের দিকে নেমেও প্রভাব ফেলতে পারেননি, বল হাতেও ছিলেন উইকেটশূন্য।
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম দুই ম্যাচে শূন্য ও ১ রান করেছেন, সৌম্য সরকার এক ম্যাচ খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি।
বোলিংয়ে একটু আশার আলো রিশাদের
দলের ব্যর্থতার মধ্যেও স্পিনার রিশাদ হোসেন ছিলেন ব্যতিক্রম। ২ ম্যাচে ৯৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে ২ উইকেট ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১ উইকেট নিয়েছেন।
দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। তাসকিন ৬৪ রান দিয়ে ২ উইকেট পেলেও, মুস্তাফিজ ছিলেন ব্যয়বহুল—১০৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
এ ছাড়া, আর কোনো বাংলাদেশি বোলার উইকেটের দেখা পাননি!
একই ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি!
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও গ্রুপপর্বেই বিদায় নিল বাংলাদেশ।
এরই মাঝে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) খেলবেন মিরাজ-শান্তরা। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন ধারাবাহিক ব্যর্থতা যে দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply