পেন্টাগনে রদবদল, সশস্ত্র বাহিনী প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প

ডেস্ক রিপোর্ট :
শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বের বড় রদবদলের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের সর্বোচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তা জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান সিকিউ ব্রাউনকে বরখাস্ত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্ট আরও পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে বদলি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। খবর বিবিসির।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি জেনারেল চার্লস (সিকিউ) ব্রাউনকে আমাদের দেশের জন্য ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেবা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই। তিনি আমাদের বর্তমান জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের চেয়ারম্যান হিসেবেও কাজ করেছেন।’
জেনারেল ব্রাউন মার্কিন ইতিহাসে দ্বিতীয় কৃষ্ণাঙ্গ কর্মকর্তা, যিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এর আগে বলেছিলেন, জেনারেল ব্রাউনকে বরখাস্ত করা উচিত, কারণ তিনি সামরিক বাহিনীতে বৈচিত্র্যতা, ন্যায়বিচার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মসূচির মতো ইস্যুগুলোতে ‘সজাগ’ দৃষ্টি রাখছিলেন।
এরপর শুক্রবার হেগসেথ আরও দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন। তারা হলেন নৌবাহিনীর চিফ অব নেভাল অপারেশনস অ্যাডমিরাল লিসা ফ্রাঞ্চেটি ও বিমানবাহিনীর ভাইস চিফ অব স্টাফ জেনারেল জিম স্লাইফ। অ্যাডমিরাল ফ্রাঞ্চেটি ছিলেন নৌবাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম নারী। গতকাল শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) অপসারিত তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকেই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিয়োগ দিয়েছিলেন।

হেগসেথ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে আমরা নতুন নেতৃত্ব নিয়োগ করছি, যারা আমাদের সেনাবাহিনীকে নিয়ে যুদ্ধ, প্রতিরোধ, লড়াই ও জয়ের মূল লক্ষ্যে মনোনিবেশ করবেন।’
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিমানবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড্যান কেইনকে জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করেছেন। ড্যান কেইন এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের পাইলট, যিনি সম্প্রতি সিআইএয়ের সামরিক বিষয়ক সহযোগী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ট্রাম্পের পদত্যাগের ঘোষণার প্রায় দুই ঘণ্টা আগে শুক্রবার জেনারেল ব্রাউন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে সেনা ঘাঁটি পরিদর্শন করেন। এই সপ্তাহে শুরুর দিকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে, প্রেসিডেন্ট তাকে অপসারণ করবেন। তার মেয়াদ ২০২৭ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
২০২০ সালে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর জাতিগত বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় জেনারেল ব্রাউন সংবাদের শিরোনামে হন। সিকিউ ব্রাউন বিমানবাহিনীকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, তিনি তার ইউনিটে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে চাপ থাকতেন এবং তার যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।

কলিন পাওয়েল ছিলেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান। টিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
নভেম্বরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ একটি পডকাস্টে বলেছিলেন, সামরিক বাহিনীতে অনেক সমস্যা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বৈচিত্র্যতামূলক উদ্যোগ, যা ট্রাম্প প্রশাসনের ‘অবশ্যই ঠিক’ করা উচিত। ওই সময় হেগসেথ বলেন, প্রথমত ট্রাম্পের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করা উচিত।
শুক্রবার পেন্টাগন ঘোষণা করেছে, তারা বাজেট কমাবে এবং আগামী সপ্তাহে পাঁচ হাজার ৪০০ প্রবেশনারি কর্মচারীকে ছাঁটাই করবে।
ইতোমধ্যে মেরিল্যান্ডের একটি ফেডারেল আদালত ট্রাম্পকে বৈচিত্র্যতা, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন থেকে সাময়িকভাবে বিরত রেখেছে। বিচারক অ্যাডাম অ্যাবেলসন রায়ে বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে মার্কিন সংবিধানে দেওয়া বাক-স্বাধীনতার অধিকারের লঙ্ঘন হতে পারে।

 

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

,

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *