৪৮ ঘণ্টায় জেলেনস্কির বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ইউটার্ন

ডেস্ক রিপোর্ট :
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন বুধবার নতুন মোড় নিয়েছে। ট্রাম্প সরাসরি জেলেনস্কিকে আক্রমণ করে তাকে ‘নির্বাচনবিহীন স্বৈরাচার’ আখ্যা দিয়েছেন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য তাকে দায়ী করেছেন। খবর সিএনএনের।

গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লেখেন, ‘জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিয়ে শত শত বিলিয়ন ডলার ব্যয় করিয়েছে এমন এক যুদ্ধে, যা জেতা সম্ভব নয়।’

এরপর মায়ামিতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কিকে দ্রুত এগোতে হবে, না হলে তার দেশই আর থাকবে না।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্য অনেকাংশেই রাশিয়ার প্রচারণার সঙ্গে মিলে যায়। রাশিয়ার হামলার কারণে জেলেনস্কি সামরিক আইন জারি করেছিলেন, যার ফলে ইউক্রেনে নির্ধারিত সময়ের নির্বাচন স্থগিত হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প এটিকে রাশিয়ার ভাষাতেই উপস্থাপন করেছেন।

এটি প্রথমবার নয়, যখন ট্রাম্প জেলেনস্কির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাইডেনের আমলে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তা নিয়েও তিনি কটাক্ষ করেন, দাবি করেন যে জেলেনস্কি ‘গ্রেভি ট্রেনে’ চড়েছেন।

সম্প্রতি ট্রাম্পের সহযোগীরা জেলেনস্কির কিছু মন্তব্য নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন। বিশেষত, সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার আলোচনায় ইউক্রেনকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে জেলেনস্কির প্রকাশ্য সমালোচনা ট্রাম্প শিবিরের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

কিয়েভে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেলেনস্কি বলেন, ‘ট্রাম্প বিভ্রান্তির জালে আটকে আছেন।’ এই মন্তব্য ট্রাম্পকে এতটাই ক্ষুব্ধ করে, তিনি ফ্লোরিডায় তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনা করে জেলেনস্কির বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণাত্মক পোস্ট দেন।

ট্রাম্পের এমন অবস্থান মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিতে পারে। ইউরোপীয় মিত্রদের তুলনায় ক্রেমলিনের সঙ্গে তার সম্পর্ক অনেক বেশি উষ্ণ হয়ে উঠছে।

এ বিষয়ে সিনেটর কেভিন ক্র্যামার বলেন, ‘ট্রাম্প সবসময় কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেন। তিনি সম্ভবত পুতিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন।’

অন্যদিকে, ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘ট্রাম্পের বক্তব্যের উদ্দেশ্য ঐতিহাসিক সত্যতা নয়, বরং ইউরোপীয় নেতাদের জাগিয়ে তোলা।’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় নেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া ইউরোপের অস্তিত্বের জন্য হুমকি।’

ট্রাম্প নিজেকে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র যোগ্য নেতা’ হিসেবে তুলে ধরছেন এবং দাবি করেছেন, শুধু তিনিই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে পারবেন।

 

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

,

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *