সৌদি বৈঠকের আগে পুতিনকে বড় ছাড় দিলেন ট্রাম্প

ডেস্ক রিপোর্ট :
সৌদি আরবে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র শান্তি আলোচনার আগে মস্কোর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কূটনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন কার্যত রাশিয়ার আন্তর্জাতিক একঘরে অবস্থান ভেঙে দিয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা ঐক্য দুর্বল হয়ে গেছে এবং ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র কতদূর যাবে, সে বিষয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। এতে মার্কিন নীতিতে নাটকীয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে, যা পুতিনের জন্য সুবিধাজনক হলেও পশ্চিমা মিত্রদের জন্য উদ্বেগজনক।

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম ইউরোপ সফরে দেওয়া একাধিক পরস্পরবিরোধী বক্তব্যের ফলে উদ্বেগ বেড়েছে, ট্রাম্প হয়তো পুতিনের সঙ্গে এমন এক শান্তি চুক্তিতে যেতে পারেন, যা ইউক্রেন বা ইউরোপের জন্য ক্ষতিকর হবে। ইউক্রেনকে আলোচনার বাইরে রেখে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে চুক্তি হলে কিয়েভের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি চুক্তির জন্য কঠোর পরিশ্রম করছি।’ কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার একক সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন না।

ইউরোপের মিত্রদের বাদ দেওয়ার শঙ্কা

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করবেন। তবে ট্রাম্পের ইউক্রেনবিষয়ক দূত কিথ কেলোগ জানিয়েছেন, ইউক্রেন আলোচনা থাকবে, কিন্তু ইউরোপীয় দেশগুলোকে সরিয়ে রাখা হতে পারে।

এ নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ইতালি, পোল্যান্ডসহ ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন। ইউরোপীয় নেতারা শঙ্কিত, এই আলোচনা ইউক্রেনের স্বার্থ উপেক্ষা করে পুতিনের দাবিকে বৈধতা দেবে।

পুতিনের জন্য কূটনৈতিক বিজয়

ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলো রাশিয়ার কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের পথ খুলে দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ন্যাটোর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ আটকে রাখা এবং রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা দুর্বল করার উদ্যোগ মস্কোর জন্য বড় জয় হতে পারে।

কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের পরিচালক আলেক্সান্ডার গাবুয়েভ বলেছেন, ‘পুতিনের জন্য এটা যেন ইস্টার, হানুক্কা, ক্রিসমাস ও জন্মদিন একসঙ্গে উদযাপনের মতো ব্যাপার।’

সৌদি আরবের কূটনৈতিক উত্থান

এই বৈঠক সৌদি আরবের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান মধ্যপ্রাচ্যে কৌশলগত শক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ইমেজ শক্তিশালী করতে চাইছেন।

এদিকে গাজার যুদ্ধ বন্ধে সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ট্রাম্প প্রশাসন কাজ করছে। তবে এই প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠেছে, কারণ আরব দেশগুলো ফিলিস্তিনের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো চুক্তি মেনে নিতে চায় না।

 

 

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

, ,

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *