চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লাকে চমকে দিয়ে ঢাকার জয়

ডেস্ক রিপোর্ট :
শক্তি আর অভিজ্ঞতার দিক থেকে যোজন যোজন এগিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ফেভারিটও ছিল চ্যাম্পিয়নরা। তবে, খেলার মাঠে সব সময় পরিসংখ্যান কথা বলে না, জ্বলে উঠতে পারে যেকোনো দল—দুর্দান্ত ঢাকা যেন তারই প্রমাণ দিল। বল হাতে শরিফুলের হ্যাটট্রিকের পর ব্যাটারদের দৃঢ়তায় নিজেদের প্রথম ম্যাচেই কুমিল্লাকে পাঁচ উইকেটে হারাল নবাগতরা।

বিপিএলের দশম আসরের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লার মুখোমুখি হয় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ঢাকার সামনে ১৪৪ রানের লক্ষ্য রাখে কুমিল্লা, যা তাড়া করতে নেমে তিন বল হাতে রেখেই কাঙ্ক্ষিত জয় লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ঢাকা। এই জয়ের অন্যতম নায়ক শরিফুল ইসলাম ও নাঈম শেখ। কুমিল্লার তিন তিনটি উইকেট পরপর তুলে নিয়ে দুর্বল করে দেন দুর্দান্ত ঢাকার শরিফুল। আর নাঈম ৪০ বলে ৫২ করে জয়ের পথে এগিয়ে দেন দলকে। যা সাজানো ছিল সমান তিনটি করে ছক্কা-চারে।

শুরু থেকেই নাঈম ছিলেন আক্রমণাত্মক। তার সঙ্গে তাল মেলান দাসুঙ্কা গুনথিলাকা। এই ওপেনিং জুটি দলকে উপহার দেন ১০১ রান। ১৩তম ওভারে তানভীর ইসলামের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন নাঈম। আরেক ওপেনার দাসুঙ্কা থামেন ৪২ বলে ৪১ রানে। তানভীরের বলে জাকের আলীর হাতে ধরা পড়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।

জোড়া দুই উইকেট নিয়ে কিছুটা স্বস্তি ফেরে কুমিল্লায়। কিন্তু সেই স্বস্তি শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি। ছোট লক্ষ্য তাড়া করে দুর্দান্ত ঢাকাই হাসে জয়ের হাসি। আর টানা দুই বারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা পায় হারের তিক্ত স্বাদ।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ টস জিতে বোলিং বেছে নেয় ঢাকা। আগে বোলিং নিয়ে শুরুটাও দারুণ করে স্বাগতিকরা। কুমিল্লার দলীয় ২৩ রানে তুলে নেয় প্রথম উইকেট। ফিরিয়ে দেয় ওপেনার লিটন দাসকে। চতুর্থ ওভারে ডি সিলভার ডেলিভারিতে মোহাম্মদ নাঈমের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুমিল্লার অধিনায়ক। ফেরার আগে সমান একটি করে চার-ছয়ে করেন ১৩ রান।

অষ্টম ওভারে আরেকটি সুযোগ পায় ঢাকা। উইকেটে এসে রান তোলার আগেই থামাতে পারত ইমরুল কায়েসকে। সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে কাজটা এগিয়ে দেন তিনি। কিন্তু সেই ক্যাচ লুফে নিতে পারলেন না ঢাকার অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

সেই যাত্রায় জীবন পেয়ে থিতু হন ইমরুল। ২৩ রানে জীবন পাওয়া ইমরুল ৪৬ বলে পেয়ে যান এই বিপিএলে নিজের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। তার সঙ্গী হিসেবে দারুণ সাপোর্ট দেন তাওহিদ। জাতীয় দলের দুই তারকা তাসকিন আহমেদ কিংবা শরিফুল—দুজনই এই জুটি ভাঙতে মরিয়া ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সফল দুজনই। শেষের দিকে দুই তারকা মিলে পাঁচ  উইকেট নিয়ে গুঁড়িয়ে দেন কুমিল্লাকে।

প্রথমে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে এসে তাসকিন ভাঙেন তাওহিদের প্রতিরোধ। তাওহিদ ৪১ বলে ৪৭ রান করে থামেন। যেখানে ছিল দুটি ছক্কা ও একটি চারের মার।

একই ওভারের শেষ বলে ইমরুলকেও মাঠ ছাড়া করেন তাসকিন। ৬৬ রানে থামান ইমরুলকে। ৫৬ বলে যা সাজানো ছিল ছয় বাউন্ডারি আর দুই ছক্কায়।

তাসকিনের পর শরিফুলও পেয়ে যান উইকেটের দেখা। নিজের শেষ ওভারে এসে তিনি পেয়ে যান টানা তিন শিকার। প্রথমে চারে নামা খুশদিলকে টিকতে দেননি শরিফুল। এরপর বিদায় করেন রোস্টন চেজকে। আর শেষ বলে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের আনন্দে ভাসেন ঢাকার হয়ে খেলা শরিফুল।

ঢাকার জার্সিতে হাত ঘুরিয়ে ২৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন শরিফুল। ৩০ রান খরচায় তাসকিন নেন দুটি। ডি সিলভা সমান এক উইকেট নিতে দেন ২২ রান।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *