স্পোর্টস ডেস্ক :
হারলেই সিরিজ হাতছাড়া, জিতলে সিরিজে ফেরার সুযোগ। এমন কঠিন সমীকরণের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রানের পাহাড় ডিঙানোর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল। কুইন্টন ডি ককদের বিধ্বংসী ঝড়ে তছনছ হলো রেকর্ডের অনেক পাতা। টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে ম্যাচটার বর্ণনা এতো সহজে দেওয়া সম্ভব নয়। কী না হলো এই ম্যাচে? এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড, দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় নতুন নাম যুক্ত হওয়া এবং সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এবং বড় লক্ষ্য তাড়ায় জয়ের রেকর্ড।
শুরু করা যাক চার্লসকে দিয়ে। সেঞ্চুরিয়নে শুরুতে ফিল্ডিং করতে নেমে তার ঝড়ের কবলে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৯ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ক্যারিবীয় ওপেনার। যা টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় আছে দ্বিতীয় স্থানে। আর উইন্ডিজের টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এটাই দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল ‘দ্য ইউনিভার্স বস’ খ্যাত ক্রিস গেইলের। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুম্বাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গেইল ৪৭ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন। আজ তাকে ছাড়িয়ে গেলেন চার্লস।
সবমিলিয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় চার্লস দুই নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি আছে ডেভিড মিলার, রোহিত শর্মা ও চেক রিপাবলিকের সুদেশ বিক্রমাসেকারার। আজ মার্কো ইয়ানসেনের শিকার হওয়ার আগে চার্লস ৪৬ বলে ১০ চার ও ১১ ছক্কায় করেন ১১৮ রান। এর আগে উইন্ডিজের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ১২টি ছক্কা মারার রেকর্ড এভিন লুইসের। আজ দ্বিতীয় স্থানে চলে এলেন চার্লস। এছাড়া ২৭ বলে ৫১ রান করে কাইল মেয়ার্স এবং ১৮ বলে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংস খেলে সহযোগীর ভূমিকা রাখেন রোমারিও শেফার্ড। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫৮ রানের পাহাড় গড়ে ক্যারিবীয়রা। যা টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। আর উইন্ডেজের ক্ষেত্রে এটাই সর্বোচ্চ। ইনিংসে মোট ছক্কা আসে ২২টি, যা এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড।
এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের জবাব দিতে নেমে সব রেকর্ড যেন তছনছ করে দিলের প্রোটিয়া ব্যাটাররা। ক্যারিবীয় বোলারদের ওপর রীতিমত ‘অত্যাচার’ চালান কুইন্টন ডি কক। মাত্র ১৫ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি। তার ঝড়ে পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটেই ১০২ রান তুলে ফেলে স্বাগতিকরা, যা নতুন বিশ্বরেকর্ড। এরপর মাত্র ৪৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক, যা টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে ষষ্ঠ দ্রুততম। সেঞ্চুরির পরই অবশ্য বিদায় নেন তিনি। তবে এর আগে ৪৪ বলে ৯ চার ও ৮ ছক্কা হাঁকিয়ে ১০০ রান করেন এই বাঁহাতি ওপেনার।
ডি কক বিদায় নিলেও পথ হারায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। রিজা হেনড্রিকসের ২৮ বলে ৬৮ রান এবং এইডেন মারক্রামের ২১ বলে অপরাজিত ৩৮ রানের জুটিতে ভর করে বাকি পথ সহজেই পাড়ি দেয় স্বাগতিকরা। সেটাও ৭ বল হাতে রেখে। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০১৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪৫ রান তাড়া করে জয় তুলে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তাছাড়া ছেলেদের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে দুই ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের (৫১৭) রেকর্ডও গড়েছে দুই দল মিলে। এর আগে এ বছরই রাওয়ালপিন্ডিতে পিএসএলে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স এবং মুলতান সুলতানসের ম্যাচে উঠেছিল ৫১৫ রান। সবমিলিয়ে এই ম্যাচে মোট ছক্কা হয়েছে ৩৫টি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি কোনো ম্যাচে সর্বোচ্চ ছয়ের বিশ্বরেকর্ড এটি।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply