নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন, দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার বিচার, দলের চেয়ারপারসনের নিঃশর্ত মুক্তি ও দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনাসহ নয়টি দাবিতে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত ষষ্ঠ গণসমাবেশ এটি।
আগের ৫টি গণসমাবেশের মতোও ফরিদপুরকেও গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। চলছে গণপরিবহণ ধর্মঘট। রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিআরটিসি বাসও চলছে না এখানে। সব বাধা উপেক্ষা করেই আরেকটি বিশাল শোডাউন করতে যাচ্ছে বিএনপি। এখন পর্যন্ত প্রথম পাঁচটি জনসভা সফলভাবে শেষ করেছে দলটি। আশেপাশের জেলাগুলো থেকে দুদিন আগেও অনেক নেতাকর্মী চলে এসেছেন সমাবেশস্থলে। আজ সকাল থেক ট্রলার, ইঞ্জিনচালিত নৌকাসহ বিকল্প উপায়ে সমাবেশে নেতাকর্মীরা এসে যোগ দিচ্ছেন। ধর্মঘটের কারণে, যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
জানা যায়, সড়কপথে ফরিদপুরে ঢোকার পথ তিনটি। একটি ভাঙ্গা হয়ে, আরেকটি গোয়ালন্দ মোড় হয়ে, অন্যটি মধুখালীর কামারখালী হয়ে। ধর্মঘটের কারণে এ তিন পথই বন্ধ রয়েছে। যদিও এই তিন পথের মধ্যে ভাঙ্গা হয়ে বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চল এবং গোয়ালন্দ ও কামারখালী হয়ে মাগুরা, খুলনা, যশোরসহ দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের বাস চলছে। কেবল ফরিদপুরে কোনো বাস যাচ্ছে না।
জানা যায়, ধর্মঘটের কারণে ফরিদপুরে থাকা মহাসড়কে ছোট বড় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি আঞ্চলিক ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাসও চলছে না। বন্ধ আছে বিআরটিসির পরিবহণও। ফরিদপুরের আশপাশের জেলা থেকে কেউ ঢুকতে পারছেন না এই জেলায়। তবে বাস না থাকায় বিকল্প পথে অনেককে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ মহাসড়কে সব ধরনের থ্রি-হুইলার, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক বন্ধের দাবিতে গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে ৩৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দেয়। এর আগে গত ৭ নভেম্বর বিভাগীয় কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়ে বাস ধর্মঘটের আলটিমেটাম দেয় জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ১০ নভেম্বরের মধ্যে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করতে হবে। দাবি মানা না হলে পর দিন সকাল ৬টা থেকে ১২ নভেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৮ ঘণ্টা সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে দলটির বিভাগীয় গণসমাবেশ যেন সফল না হয়, তাই সরকার ষড়যন্ত্র করে ধর্মঘট ডেকেছে। তবে কোনোভাবেই বিএনপিকে দমানো যাবে না। যদিও পরিবহণ নেতাদের দাবি, ধর্মঘটের সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের দাবি, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং মহাসড়ক নিরাপদ করতে যৌক্তিক দাবিতে ধর্মঘট পালন করছেন তারা। এর সঙ্গে ফরিদপুরে বিএনপির শনিবারের গণসমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply