ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দেশের ১৯ জেলায় আঘাত হানবে

আবহাওয়া ডেস্ক :
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দেশের ১৯ জেলায় আঘাত হানবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অধিদফতরের বরাতে এ তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।

রোববার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভার আগে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।

গত ২০ অক্টোবর সৃষ্ট লঘুচাপটি রোববার দুপুরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গভীর নিম্নচাপটি রোববার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়, তাহলে এর নাম হবে- সিত্রাং। এটি আরও এগিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিতে পারে। যদি উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেয় তাহলে এটি কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত প্রতিটি জেলাতেই আঘাত হানবে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে বলেও জানান এনামুর রহমান।

কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৭৩০ কিলোমিটার এলাকাজুড়েই এটি আঘাত আনতে পারে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভােলা, পিরােজপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, নােয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গােপালগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলায় আঘাত হানবে সিত্রাং। এ জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ২৪ অক্টোবর (সোমবার) দিবাগত রাত থেকে ২৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। এটি উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিলে ৭৩০ কিলোমিটার বিস্তৃত ১৯টি উপকূলীয় জেলায় আঘাত হানতে পারে। উপকূলের আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার থাকতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতির বিষয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, লঘুচাপ সৃষ্টির পর থেকেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস সেন্টারগুলোর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোকে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সব জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়ালি মিটিং হয়েছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং হয়েছে। সিপিপিকে (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) প্রস্তুতি গ্রহণ ও সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

অমাবস্যা থাকার কারণে ৩ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু জলোচ্ছ্বাস হতে পারে উল্লেখ করে এনামুর রহমান বলেন, গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যে আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আতিকুল হক, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম রওশন আরা, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক আহমেদুল হক এবং আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এটিভি বাংলা / হৃদয়


Posted

in

by

Tags:

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *