হঠাৎ করে নিম্নচাপ আর নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়া যেন মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর জেলেদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন ইলিশের দেখা পাওয়া না গেলেও নিম্নচাপের কারণে জালে ধরা দিচ্ছে প্রচুর ইলিশ। সরগরম হয়ে উঠেছে মাছের আড়তগুলো।
ইলিশের মৌসুম শেষের দিকে। অথচ দেখা মিলছিল না রূপালি ইলিশের। সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পরলেও ভোলার দুই পাশের মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার জেলেদের জীবন কাটছিল ধারদেনা করে। তবে নিম্নচাপ শুরু হতেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। উত্তাল মেঘনা আর সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে নদ-নদীর পানি। তাই ইলিশ সাগর থেকে মিষ্টি পানির নদী মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় উঠতে শুরু করেছে। যা জেলে ট্রলারের আনাগোনা আর নদীর পাড়ের মাছের আড়তগুলোর হাকডাকেই বোঝা যাচ্ছে। ব্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলে ও আড়তদাররা। যেভাবে ইলিশ ধরা পরছে তা অব্যাহত থাকলে ধারদেনা পরিশোধ করতে পারবেন বলে জানালেন মেঘনা নদীর জেলে মো. ইব্রাহিম।
তার মতে, ‘বিগতদিনগুলো ধারদেনা করে চলতে হয়েছে। এখন যেভাবে ইলিশ জালে ধরা পড়ছে তাতে আশা করছি দেনা পরিশোধ করা সম্ভব হবে।’ একই কথা বলেন মো. কাসেম মিয়া। তবে সমস্যার কথা বললেন, হালিম মাঝি। তার মতে, ‘মেঘনায় অন্তত দের থেকে আড়াইশর বেশি পিটানো জাল আছে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের। এরা জাটকা ইলিশ ধরে সব শেষ করে দিচ্ছে।’
এদিকে আড়তদার মো. বাচ্চু বলেন, ‘বহুদিন মাছ ধরা পড়েনি। বৃষ্টি না থাকায় ইলিশ কম পানিতে আসেনি। নিম্নচাপ আর নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। আশা করছি মুক্ত হব মহাজনদের দাদন থেকে। বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীতে ইলিশ ছিল না। শুধু সাগরেই ইলিশ ছিল।’
সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও ভড়া মৌসুমে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশের দেখা না পাওয়ায় নদীতে পলি জমে ভরাট হওয়া, কম বৃষ্টি হওয়াকে দায়ী করলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ।
এই মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘ইলিশের জন্য দরকার পানির গভীরতা। তা ছিল না। এখন পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাগর থেকে ইলিশ মিষ্টি পানির নদীতে উঠতে শুরু করেছে। জেলেরা তাদের ধারদেনা পরিশোধ করতে পারবে। আর সরকারি এক লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হবে।’
এদিকে ভোলার সচেতন মহল মনে করছেন, দ্রুত নদীর প্রতিবন্ধকতা দূর করে, নিষিদ্ধ জাল অপসারণের মাধ্যমে ইলিশের গতি ঠিক রাখতে পলিমাটি অপসারণ করা জরুরি। একই সঙ্গে নদী দখলে রাখা সব নিষিদ্ধ জাল তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সরকারের প্রতি।
এটিভি বাংলা / হৃদয়
Leave a Reply