1. [email protected] : @nexttech :
  2. [email protected] : SM Solaiman : SM Solaiman
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন

বজ্রপাতে বাড়ছে মৃত্যু, দরকার কার্যকর পদক্ষেপ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৮৯ Time View

আবহাওয়া ডেস্ক :
ঘন
ঘন বজ্রপাত কেন?
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু বেড়েছে বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ঘনঘন বজ্রপাত হচ্ছে। আর এতে বজ্রপাতের তীব্রতাও বেড়ে গেছে।

তিনি বলেন, আগে বড় বড় বিল-হাওরে বজ্র এসে পড়ত। কিন্তু এখন লোকালয়েও বাজ পড়ছে। উদহারণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, পুকুরের পাড়ে কেউ দাঁড়িয়ে আছেন, তার ওপর এসে বাজ পড়ছে। এগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রক্রিয়ারই অংশ। তবে বজ্রপাত সব জায়গায়ই বেশি ঘটে না। হাওর-বাওড় অঞ্চল বজ্রপাতপ্রবণ হিসেবে ধরে নেয়া হয়।

তার মতে, সুনামগঞ্জ ও রাজশাহীর কিছু এলাকায় বজ্রপাত বেশি হচ্ছে। এছাড়া নদীর আশপাশে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। সবসময়ই এমনটা হয়ে আসছে।

বজ্রপাতের পূর্বাভাস
আবহাওয়াবিদ ড. আবদুল মান্নান বলেন, বজ্রপাতের পূর্বাভাসের ব্যবস্থা আছে। তবে সেটা স্বল্প-সময়ের জন্য। আমরা যেমন পূর্বাভাসে লিখে দিই, ‘অস্থায়ীভাবে দমকা হওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে’। কিন্তু এ নিয়ে আরও কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রকাশ্যে বলে দিচ্ছি, কোন কোন জেলায় বজ্রপাত হতে পারে। তবে এটাকে আরও কার্যকর করতে মোবাইল সিস্টেমে এলার্ট বা সতর্ক করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ধরেন-আমরা যদি কোনো একটি জেলায় বজ্রপাত হবে বলে সতর্ক করতে চাই, সেটা নির্দিষ্ট করে বলতে আরও কাজ করতে হবে।’

তার মতে, বজ্রপাত দুই সময় বেশি হয়। প্রথমত, মার্চ-এপ্রিল ও মে মাসে। এ সময়ে কালবৈশাখী ঝড় হয়। আর ফেব্রুয়ারির শেষ সময় থেকে শুরু হয়। দ্বিতীয়ত, বর্ষকালে যেমন হয়-আবার সেপ্টেম্বর-অক্টোবরেও বেশি হয়। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে তখন কম হয়। কিন্তু বর্ষায়ও মাঝে-মাঝে হয়, যখন মেঘের উচ্চতা বেড়ে যায়

সমসাময়িক সময়ে বজ্রপাত বেড়ে গেছে বলে জানান তিনি। এই আবহাওয়াবিদ বলেন, গাছপালা কম থাকার কারণে এমনটি হচ্ছে। তালগাছের মতো বড় গাছগুলো কমে গেলে বজ্রপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে। যে কারণে লোকজনকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

বজ্রপাতে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে না বলে জানান অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, তবে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু সম্প্রতি বেড়েছে।

এক গবেষণায় অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী আশরাফ দেওয়ান জানিয়েছেন, বর্ষার আগে মধ্য-এপ্রিল ও জুন-এই সময়টিতে বাংলাদেশে ঘন ঘন বজ্রপাত হয়। মৌসুমি ভারি বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগের সময়টাতে বাংলাদেশে ৬৯ শতাংশ বজ্র আঘাত হানে।

দ্য ন্যাশনাল লাইটেনিং সেফটি কাউন্সিলের আবহাওয়াবিদ রন হোলে বলেন, সূর্য ওঠা থেকে শুরু করে মধ্যদিনে বাংলাদেশের অধিকাংশ বজ্রপাত হয়। দুর্ভাগ্যবশত, এই সময়টিতেই বিপুল সংখ্যক মানুষ কৃষি কাজ করেন।

বজ্রপাত নিরোধে পদক্ষেপ
বজ্রপাত নিরোধে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান অধ্যাপক জিল্লুর রহমান। তিনি জানান, ‘বড় যদি কোনো গাছ থাকে, তবে সেটার ওপর গিয়ে পড়ে বজ্র। এটা তো আসলে বিদ্যুৎ। মহাকাশ থেকে যখন এটা আসে, তখন সবচেয়ে উঁচু যেটা সে কাছে পায়, ওটাতে গিয়ে সে পড়ে।’

এই বিশেষজ্ঞ জানান, বিদ্যুৎ বিপরীতধর্মীকে আকর্ষণ করে। যে কারণে কাছে বড় কোনো গাছ কিংবা পিলার থাকলে বজ্র গিয়ে সেটিতে আঘাত হানে। যেটা কাছে পাবে, সেটিতে গিয়ে পড়বে বজ্র। এ জন্য বজ্রপাত প্রতিরোধে অ্যারেস্টারের ধারণা এসেছে। অ্যারেস্টার হলো বড় একটি পিলার-যদি আমরা তা বাড়িঘরের আশপাশে স্থাপন করতে পারি, তবে তা বজ্রনিরোধের কাজ করবে।

ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, বড় বড় গাছ বজ্র প্রতিরোধ করতে পারে, যে কারণে বজ্রপাতের সময় গাছের নিচে দাঁড়ানো নিষেধ। আগে বড় বড় তালগাছ ছিল। কিন্তু এখন তালগাছের সংখ্যা কমে গেছে। আর একটি তালগাছ বড় হতে অনেক সময় লাগে। এখন তালের বীজ লাগালে বহু বছর পরে তার ফল পাওয়া যাবে। কিন্তু আমাদের তাৎক্ষণিক বজ্রপ্রতিরোধক দরকার। কাজেই এখন সমাধান হলো অ্যারেস্টার বসানো। বজ্রপ্রবণ এলাকাগুলোতে ঘন ঘন অ্যারেস্টার বসাতে হবে।

দুর্যোগবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক আরও জানান, ‘কোথায় কোথায় বেশি বজ্র হচ্ছে, তা শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই। এগুলোতে যদি পাইলটভিত্তিতে হলেও তাড়াতাড়ি অ্যারেস্টার বসাতে পারি, তবে কার্যকর ফল পাওয়া যেতে পারে। এ নিয়ে সরকারের প্রকল্প আছে। সরকার তাৎক্ষণিক কিছু একটা করবে বলে আশা করছি।’

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস-এগুলো ছাপিয়ে বজ্রপাতেই এখন বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তুলনামূলক হিসাব করে দেখলে বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। নদী এলাকা, হাওর এলাকা ও বড় বড় বিল আছে, এমন এলাকায় সরকারি প্রকল্পগুলো বাস্তাবয়ন করা দরকার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, অ্যারেস্টার দিয়ে বজ্রপাত কমানো যায় না, তবে ক্ষয়ক্ষতি কমানো যায়। বজ্রপাতের কারণে যে আমাদের ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা কমিয়ে আনা যাবে।

এটিভি বাংল্কা / হৃদয়

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© 2022
কারিগরি সহায়তা: Next Tech