ডেস্ক রিপোর্ট:
মহান আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় শুক্রবার ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হলো। সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর আরাফাত ময়দান লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনীতে মুখরিত হয় এদিন।
হজ পালনে শুক্রবার ফজরের পর গোটা দুনিয়া থেকে আগত মুসলমানরা ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হন।
৯ জিলহজ মূল হজের দিন। এদিন হাজিরা আরাফাতের ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকেন। তাঁদের কণ্ঠে ছিল ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক’ (আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)।
দুপুর সাড়ে তিনটায় শুরু হয় হজের খুতবা। শায়খ ড. মুহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল ইসা খুতবা পাঠ করেন। বাংলাসহ ১৪টি ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করে শোনানো হয়।
খুতবায় শায়খ ড. মুহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল ইসা বলেছেন, সর্বোত্তম মানুষ সেই যে কল্যাণের পথে চলে। উম্মাহর উচিত একে অপরের প্রতি সহানুভূতির আচরণ করা। আল্লাহর রহমত সহানুভূতিশীলদের একেবারে কাছে।
আরাফার ময়দানে মসজিদে নামিরাতে হজের খুতবা দেয়ার সময় তিনি আরও বলেন, আল্লাহ ছাড়া মুসলমানদের আর কোনো উপাস্য নেই, তিনি এক, তাঁর কোনো অংশীদার নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তার সাথে অন্য কাউকে শরিক না করতে এবং তিনি ছাড়া অন্য কারো কাছে না চাইতে। আল্লাহ তায়লা অত্যন্ত দয়াশীল।
খুতবায় তিনি আর বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানুষকে নিজের ইবাদতের জন্য তৈরি করেছেন। আল্লাহ মানুষকে নিজের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করতে বলেছেন এবং তাকওয়া অবলম্বন করতে বলেছেন।
মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়া হজের অন্যতম ফরজ। এদিন সূর্যাস্তের পর আরাফাতের ময়দান থেকে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেন হাজিরা। আরাফাত থেকে মুজদালিফা যাওয়ার পথে মাগরিবের নামাজের সময় হলেও নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। সেখানে পৌঁছার পর মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে পড়েন হাজিরা। মুজদালিফার খোলা প্রান্তরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হয়। কারণ, এই মুজদালিফার খোলা প্রান্তরে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটান আদি পিতা হজরত আদম (আ.) ও আদি মাতা হজরত হাওয়া (আ.)। এ মাঠেও কিছুদূর পরপর শৌচাগার রয়েছে।
শয়তানের উদ্দেশে পরপর তিন দিন ছুড়তে ৭০টি পাথর সংগ্রহ করতে মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব। ফজরের নামাজ পড়ে দোয়া–দরুদ পড়ে সূর্যোদয়ের কিছু আগে মিনার উদ্দেশে রওনা দেওয়া ও পরে মিনা ময়দানে অবস্থিত তিনটি স্তম্ভ— জামারায় গিয়ে শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করা হাজিদের পরবর্তী কাজ।
পাথর নিক্ষেপ–পরবর্তী কাজ হলো দমে শোকর বা কোরবানি করা। হাজিরা কোরবানির টাকা নির্ধারিত ব্যাংকে আগেই জমা দেওয়ায় কোরবানির জন্য নির্ধারিত স্থানে যেতে হবে না। জামারা থেকে বেরিয়ে পুরুষ হাজিদের মাথা মুণ্ডন করতে হয়।
হাজিরা মিনার কাজ শেষে আবার পবিত্র মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করে নিজ নিজ দেশে ফিরবেন।
এটিভি বাংলা/আমান
Leave a Reply