ডেস্ক রিপোর্ট:
করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধসহ অর্থনীতিতে নানা চ্যালেঞ্জ থাকার পরও দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)-এর পরিমাণ বাড়ছে। আসছে নতুন নতুন বিনিয়োগ প্রস্তাব। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে নিট বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন (১১৬ কোটি) মার্কিন ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। এটি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি। সূত্র জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট বিদেশি বিনিয়োগের অঙ্ক ছিল ১২৭ কোটি ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা বেড়ে ১৭৭ কোটি ডলার হয়। চলমান প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অর্থবছরের শেষ চার মাসে বজায় (মার্চ-জুন) থাকলে নিট এফডিআই ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের কাছাকাছি যেতে পারে। শুধু যে নিট এফডিআই বেড়েছে তাই নয়, নতুন নতুন বিনিয়োগ প্রস্তাবও আসছে দেশে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত চীন ও কোরিয়া থেকে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। এ ছাড়া তুরস্ক ও ইতালির উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। দেশ দুটির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিডার কর্মকর্তারা।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ২০২১ ও ২০২২ সালে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআই হিসেবে বিডায় যে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, সেখানে সবার প্রথম চীন। প্রায় ৭৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে চীন থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে, যার পরিমাণ প্রায় ১৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া তুরস্ক, ইতালির উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
বিডা কর্মকর্তারা জানান, ইতালির উদ্যোক্তাদের সঙ্গে তাঁরা গতকাল ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে ইতালির উদ্যোক্তারা দেশের তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ইতালিতে। এ ছাড়া দেশটি থেকে এ খাতের মেশিনারিজ আমদানি করেন পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। এ কারণে ইতালির বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখছেন।
এ ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগ টানতে তুরস্কে রোড শো করেছে বিডা। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দেশটির বাণিজ্য উপমন্ত্রী, ইস্তাম্বুল চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্টসহ অন্তত ৫০ জন ব্যবসায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন। তুরস্কের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, কৃষি, আইটি, ওষুধ উপকরণ, অটোমোবাইল, অটো পার্টসসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, এরই মধ্যে তুরস্কের দুটি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। দেশটির আর্সেলিক, এ এস নামে একটি কোম্পানি সিঙ্গারের শেয়ার কিনে নিয়েছে; তুরস্কের আরেকটি কোম্পানি বাংলাদেশে এলপি গ্যাস সরবরাহে যৌথ বিনিয়োগ করেছে। সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এ দুটি কোম্পানিকে আমরা ঠিকভাবে ব্যবসায়িক সুবিধা দিতে পারলে তারাই তাদের দেশের অন্য কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে।’
এটিভি বাংলা/সাইমুন
Leave a Reply