ডেস্ক রিপোর্ট:
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে।এই বাজেটে ঘাটতি ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাজেট সমাপনী অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের সর্বসম্মত কণ্ঠভোটে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পাশ হয়।শুক্রবার থেকে এ বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হবে।
গত ৯ জুন সংসদে এই বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম ও বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট।‘কোভিড অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে আজকের বাজেট। গত দুবছর করোনা মহামারির কারণে থমকে ছিল সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। সেখান থেকে বেরিয়ে আগামী দিনগুলোয় উন্নয়নের গতিধারা ফিরে আসবে— এমন স্বপ্ন দেখছেন অর্থমন্ত্রী। যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকট এরই মধ্যে ঝুঁকিতে ফেলছে বিশ্বসহ দেশের অর্থনীতিকে। কঠিন মূল্যস্ফীতির চাপে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ। এটি এবারের বাজেটের চ্যালেঞ্জ।
সংসদ সদস্যরা অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। করোনার কারণে দুই বছর পর সংসদ সদস্যদের স্বশরীরে উপস্থিতি এবং প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর দীর্ঘ আলোচনা এবারই প্রথম।
প্রস্তাবিত বাজেটে পাচার হওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দেশে আনার ক্ষেত্রে যে সুযোগ রাখা হয়েছিল- তা বাতিল করা হয়েছে। তবে কেউ ঘোষণা দিয়ে নগদ অর্থ আনতে পারবে। সে ক্ষেত্রে সাড়ে ৭ শতাংশ কর দিয়ে তা আনার সুযোগ রাখা হয়েছে।
একইসঙ্গে কম হারে করপোরেট কর সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সংশোধন আনা হয়েছে। যেসব কোম্পানি বছরে ৩৬ লাখ টাকার বেশি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করবে, তারা কম হারে করপোরেট কর পরিশোধের সুবিধা পাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই সীমা ছিল বছরে ১২ লাখ টাকা।
এ ছাড়া সব সেবার ক্ষেত্রে ই-টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) যুক্ত করে রিটার্ন দাখিলের যে বাধ্যবাধকতা ছিল, তাতেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। শুধু ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এদিকে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর প্রায় মাসব্যাপী আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ব্যয়ের আকারসহ অন্যান্য মৌলিক ইস্যুতেগুলোতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মোট ব্যয়ের আকার ধরা হয়েছে ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা।
৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা বাজেটের মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় করা হবে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় করা হবে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।
এটিভি বাংলা/রাশেদ
Leave a Reply