বুধবার সন্ধ্যায় হেয়ার রোডে নিজের সরকারি বাসভবনে শাবিপ্রবি’তে চলমান আন্দোলনের বিষয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান।
এসময় মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার সঠিক পরিবেশ বজায় রাখতে চায় সরকার। দেশের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলনের এরকম ঘটনা যেন না ঘটে। যে কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে সরকার প্রস্তুত। প্রয়োজনে সিলেট যাবেন তিনি। উপাচার্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রপতি।
উপাচার্য বদল হলেই কি সমস্যা সমাধান হবে কিনা প্রশ্ন রেখে দীপু মনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা হবে। তাদের অভিযোগ, অসন্তোষগুলো বিচার বিশ্লেষণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনায় এনে সমস্যা সমাধান করা হবে। খুব দ্রুতই আন্দোলন শেষ হবে।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এসব মামলা নিষ্পত্তির জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে, বুধবার ভোর ৪টার দিকে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক। তার অনুরোধে আন্দোলনকারীরা অনশন ভাঙতে সম্মত হন। পরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী শিক্ষার্থীদের মুখে খাবার তুলে দিয়ে অনশন ভাঙান।
এসময় সরকারের উচ্চ মহল থেকে যেসকল আশ্বাস দেয়া হয়েছে তা রক্ষা করার অনুরোধ জানিয়েছেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের অনুরোধ রক্ষা করে অনশন ভঙ্গ করেছে। আমি আজ সবচেয়ে বেশি আনন্দিত এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাকে দেয়া কথা যদি রক্ষা না করা হয় তাহলে তারা শুধু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না, পুরো জাতির কাছে তারা বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরিগণিত হবেন। আন্দোলনে মানবিক সহায়তা দেয়ায় সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীকে আটক করার নিন্দাও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৬ই জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের পিটুনি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটার পর থেকে আন্দোলন জোরদার হয়। উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি। আন্দোলন সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে এবং শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলগুলো ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সেটিও মেনে নেয়নি শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
এরপর গত বুধবার বেলা ৩টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এটিভি বাংলা/আমান
Leave a Reply