ডেস্ক রিপোর্ট:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পরপর নয়টি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞ টিম জানিয়েছে, পার্কে মারামারি করে ৪টি এবং ইনফেকশনাল ডিজিজে অপর ৫টি জেব্রার মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান এ বিষয়ে গঠিত বিশেষ মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও পার্কের সাবেক চিফ ভেটেরিনারি অফিসার ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহ।
গত ২ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে জেব্রাগুলো মারা যায়। পার্কটিতে মোট ৩১টি জেব্রা ছিল। ৯টির মৃত্যুর পর এখন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২–এ। এভাবে নয়টি জেব্রার মৃত্যু অনেকেই রহস্যজনক মনে করছেন।
ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহ জানান, হঠাৎ করে গায়ের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে জেব্রাগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া ৯টির মধ্যে ৭টি স্ত্রী জেব্রা ও ২টি পুরুষ।
মেডিকেল বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি অনুষদের অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নুর আলী খান, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি ও অবস্টেট্রিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল আলম, ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মো. কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকার কেন্দ্রীয় পশু হাপসপাতালের সাবেক প্রধান ভেটেরিনারি অফিসার ও ঢাকা চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ডা. এবিএম শহীদ উল্লাহ, গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এসএম উকিল উদ্দিন এবং সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি অফিসার ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন।
ডা. এ বি এম শহীদুল্লাহ আরও জানান, জেব্রা দলবেঁধে চলে। মৃত্যুর আগ থেকে এদের মধ্যে কোনো রোগের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে না। প্রাণীগুলো বন্য, এদের কাছেও যাওয়া যায় না। হঠাৎ তারা দল থেকে আলাদা হয়ে মাটিতে পড়ে যায়, সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। পেট ফুলে গিয়ে মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। এক সময় মারা যাচ্ছে। করোনা সন্দেহে পিসিআর ল্যাবে মৃত জেব্রাগুলোর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্টগুলো নেগেটিভ এসেছে। এছাড়াও খাবারে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হতে পারে- এমন সন্দেহে খাবারগুলোও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। মৃত জেব্রাগুলোর ফুসফুস, লিভার, মৃত্যুর পর পেটে থাকা অর্ধগলিত খাবারগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে। যার রিপোর্ট সভার আগেই আমাদের কাছে চলে আসে।
মেডিকেল বোর্ডের সভায় জেব্রার নিরাপদ আবাসনের জন্য ১০ দফা সুপারিশ করা হয়েছে।
সেগুলো হলো-জেব্রাগুলোকে আলাদা করে রাখতে হবে। যেখান থেকে জেব্রাগুলোকে ঘাস দেওয়া হতো, সেখান থেকে ঘাস সরবরাহ আপাতত বন্ধ রাখতে হবে। যেসব ব্যাকটেরিয়ার ভ্যাকসিন নেই সেসব ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচাতে খাবারের সঙ্গে এন্টিবায়োটিক পাউডার ব্যবহার করতে হবে। খাবারগুলো টুকরো করে কেটে ট্রের মধ্যে পানিতে করে দিতে হবে।
এটিভি বাংলা/আমান
Leave a Reply