ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ইউক্রেনে যেকোন মুহূর্তে মস্কো আগ্রাসন চালাতে পারে এমন আশঙ্কায় জেনেভায় বৈঠকে বসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জেনেভায় এরই মধ্যে আলোচনার বসেছেন। বৈঠকে বসার আগে বক্তব্যে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন। অন্যদিকে লাভরভ আলোচনাকে উন্মুক্ত ও প্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করেছেন।এরআগে, ব্লিনকেন সতর্ক করে বলেছিলেন রাশিয়ার কোনো বাহিনী ইউক্রেনে সীমান্ত অতিক্রম করলে মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে। ইউক্রেন সীমান্ত থেকে লক্ষাধিক সেনা সরিয়ে নিতে বলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ইউক্রেনে হামলা কিংবা আগ্রাসনের পরিকল্পনা থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে মস্কো। পশ্চিমা সরকারগুলোর কাছে বেশ কয়েকটি দাবি তুলেছে রাশিয়া। যার মধ্যে ইউক্রেন কখনো ন্যাটো জোটে যোগ দিতে পারবে না এবং ন্যাটোর কার্যক্রম পোল্যান্ডসহ সদস্য দেশগুলোতে সীমিত করতে হবে।
সুইজারল্যান্ডের একটি বিলাসবহুল হোটেলে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে শুক্রবার সাক্ষাৎ হয়। এতে ব্লিনকেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় তাহলে পশ্চিমা বিশ্ব একত্রিত হয়ে ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
অপরদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোকে স্পষ্ট কিছু শর্ত দিয়েছেন। তিনি বলেন, রাশিয়া তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই তার দাবি হচ্ছে, প্রতিবেশী ইউক্রেনকে সামরিক জোট ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। একইসঙ্গে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর যত কার্যক্রম রয়েছে তা বন্ধ করতে হবে এবং এ অঞ্চলে অস্ত্র পাঠানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ন্যাটোকে আগামী সপ্তাহের মধ্যে এর উত্তর দিতে হবে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ব্লিনকেন আরও কিছু দাবি উত্থাপন করেছে। এরমধ্যে রয়েছে, মার্কিন নাগরিক পল হেলান ও ট্রেভর রিডের মুক্তি। তার দাবি, এই দু’জনকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাই অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিতে হবে। কিন্তু ক্রেমলিন জানিয়ে দিয়েছে, তারা বিচার বিভাগের কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।
ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ১ লাখ সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। পশ্চিমা দেশগুলো আশঙ্কা করছে এটি মূলত ইউক্রেনে অভিযান চালানোর পরিকল্পনার অংশ। যদিও রাশিয়া প্রথম থেকেই এমন দাবি অস্বীকার করে আসছে। জেনেভায় ব্লিনকেন-ল্যাভরভের বৈঠক শুরুর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মস্কোকে উত্তেজনা নিরসনের কূটনৈতিক উপায় জোরালো করার তাগিদ দেবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, পশ্চিমাদের পরীক্ষা নিতে গেলে পুতিনকে মারাত্মক মূল্য দিতে হবে। তিনি এও ইঙ্গিত দেন যে, এই প্রতিক্রিয়া নির্ভর করবে রাশিয়া কিভাবে আগাচ্ছে তার ওপর। বাইডেনের ওই মন্তব্যের পর রুশ আগ্রাসনের মুখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কেমন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। পরে মার্কিন কর্মকর্তারা দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করে। বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, আমরা শুরু থেকেই স্পষ্ট। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের জবাব যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা দ্রুত, তীব্রতার সঙ্গে এবং সম্মিলিতভাবে দেবে।
এটিভি বাংলা/ ফয়সাল
Leave a Reply